ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

সংগৃহীত ছবি

ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে সিরাজগঞ্জের নদী তীরবর্তী মানুষের। ভাঙন ইতোমধ্যে অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন। ঝুঁকিতে আছে আরও কয়েক হাজার পরিবার। ভাঙনকবলিতদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যদি সঠিক সময়ে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করতো, তবে সর্বস্বান্ত হতে হতো না তাদের।

যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলী জমি তলিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় যমুনা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার জানান, সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫৫ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপদসীমা- ১২
দশমিক ৯০ মিটার)।

কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২৮ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪.৮০ মিটার)। পানি বাড়ায় যমুনার কয়েকটি পয়েন্টে যেমন ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে, তেমনি নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে।

আড়কান্দি গ্রামের বয়োবৃদ্ধ সমশের আলী জানান, যমুনার ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে এখন ফকির হয়ে গেছি। ফকিরের খাতায় নাম উঠে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড আগে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এমনটা হতো না।

একই এলাকার শফিকুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, ফকির চান ও পরশ সেখ জানান, বসতভিটা ভাঙতে ভাঙতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আর পারছি না। খোলা আকাশের নিচে পরিবার-পরিজন নিয়ে আর কতদিন বসবাস করবো। সরকারও আমাদের দেখছে না। এখন যদি সরকার ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন না করে তবে আরও কত পরিবার যে নিঃস্ব হয়ে পড়বে তার হিসাব নেই।

চৌহালী উপজেলার ভুতের মোড় এলাকার জাহাঙ্গীর জানান, ভাঙন অব্যাহত থাকায় এখনো শতশত বসতভিটা, দোকানঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে রয়েছে।

সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সি বলেন, চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে বলেছি। পানিবন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করছি আমরা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, কয়েকদিনে ভারী বর্ষণের ফলে এক সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি আরও কয়েকদিন বাড়বে। পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারী বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আর ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, চলতি বন্যায় সরকারকারীভাবে ৭৪০ মেট্টিক টন চাল, নগদ ২০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, শিশুদের জন্য ২ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। এখন পর্যন্ত বন্যাকবলিত মানুষদের তালিকা করা হয়নি। তালিকা পেলে বরাদ্দ বিতরণ করা হবে।

news24bd.tv/SHS

এই রকম আরও টপিক