জঙ্গি আস্তানা থেকে আটক ফাহিম যশোর বোর্ডে মেধা তালিকায় নবম হয়েছিল 

ফাহিম খান

জঙ্গি আস্তানা থেকে আটক ফাহিম যশোর বোর্ডে মেধা তালিকায় নবম হয়েছিল 

অনলাইন ডেস্ক

যশোর জিলা স্কুলের মেধাবি ছাত্র ছিলেন ফাহিম খান (১৮)। ২০২১ সালে যশোর বোর্ড থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম জিপিএ-৫ পেয়ে যশোর বোর্ডে মেধা তালিকায় নবম হন। ভর্তি হন ঢাকার নটর ডেম কলেজে।

কিন্তু শারীরিক অসুস্থার কারণে ফাহিম বেশি দিন ক্লাস করতে পারেননি। কলেজের নিয়ম অনুযায়ী ৮০ ভাগ উপস্থিতি না থাকলে তাকে ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেওয়া হয় না। এ কারণে সে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারায় চরম হতাশায় ভুগছিলেন। ঘরে একাকি থাকতেন।
নামাজ আদায় করতেন। ইসলামী চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ থাকলেও কেউ বুঝতে পারেনি এত দূর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে সে। কথাগুলো বলছিলেন ফাহিমের বাবা যশোরের আদালতের সরকারি কৌশুলী (এপিপি) অ্যাডভোকেট এমডি আইয়ুব খান।

গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামের বাইশালী টিলা থেকে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেল’ জঙ্গি আস্তানা থেকে ১৭ জনকে আটক করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। এর মধ্যে যশোরের ফাহিম খান (১৮) রয়েছেন।

সিটিটিসি জানায়, আটক ১৭ জন সবাই স্বীকার করেছে তারা নতুন জঙ্গি সংগঠন ইমাম মাহমুদের কাফেলার সদস্য।

গত ২৮ জুলাই সকালে ফাহিম খান বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। পরদিন ২৯ জুলাই তার বাবা কোতয়ালি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি জিডি করেন

ফাহিমের বাবা আইয়ুব খান বলেন, ‘কোরবানির ঈদের কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে আসে তার ছেলে ফাহিম খান। এরপর হঠাৎ ২৮ জুলাই সকালে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে তিনি কোতয়ালি থানায় জিডি করেছিলেন। পরে যশোরের ডিবি পুলিশ তাকে খোঁজার করার চেষ্টা করে। গত মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদে দেখতে পাই মৌলভীবাজার থেকে ১৭ জন আটক হয়েছেন, তার মধ্যে আমার ছেলেও রয়েছে। ’

যশোরের ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম জানান, ‘মৌলভীবাজার থেকে আটক ১৭ জঙ্গির মধ্যে ফাহিম খানও রয়েছেন। তার পিতা কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি করার পর তারা মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাকিং করে জানতে পারেন, ২৮ জুলাই তার সর্বশেষ অবস্থান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাসের ভেতর পাওয়া যায়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। ফাহিম যে বাসে যাচ্ছিলেন ওই বাসের সুপারভাইজারের সাথে তারা যোগাযোগ করেন। সুপারভাইজারের কাছ থেকে জানা যায়, বাসের গন্তব্য ছিলো পাবনা। ’

তিনি আরও জানান, ফাহিম খান জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে পড়েছেন সন্দেহ হওয়ায় তারাই বিষয়টি সিটিটিসিকে জানিয়েছিলেন।

যশোরের আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এম ইদ্রিস আলী বলেন, ‘অ্যাডভোকেট এমডি আইয়ুব খান বাবুল সাব জজ-২ আদালতের অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি)। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তবে তার কোন পদবি নেই। তিনি একজন কর্মী। তার ছেলে নিখোঁজ হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পাওয়া গেছে কিনা তা জানি না। ’

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক