গ্রেপ্তার যুব মহিলা লীগ নেত্রী ‘দ্বিতীয় পাপিয়া’ মিশু বহিষ্কার

গ্রেপ্তার যুব মহিলা লীগ নেত্রী ‘দ্বিতীয় পাপিয়া’ মিশু বহিষ্কার

অনলাইন ডেস্ক

নারীকে বিবস্ত্র করে ছবি ধারণ করার ঘটনায় সাভার থেকে গ্রেপ্তার দ্বিতীয় পাপিয়া হিসেবে খ্যাত মেহনাজ তাবাচ্ছুম মিশুকে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে দুপুরে সাভার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন নিজ বাড়ি থেকে মেহনাজ মিশুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায়, ঢাকা জেলা উত্তর শাখার মেহনাজ তাবাচ্ছুম মিশুকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।

জানা গেছে, তিনি এলাকায় নিজেকে যুবলীগ নেত্রী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করতেন।

এদিন সকালে ভুক্তভোগী নারীর মা বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়।

সম্প্রতি সাভারে এক নারীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টাসহ নানা অভিযোগে মিশুকে গ্রেপ্তার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।

তিনি যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারওয়ারের স্বাক্ষর নকল করে ঢাকা জেলা যুবলীগের কমিটি সাজিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ ছিল মিশুর বিরুদ্ধে। এমনকি তার বিভিন্ন অন্যায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাভারের খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মিশুর অপকর্মের যেন শেষ নেই। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। তার নিজস্ব টর্চার সেল ছিল। তার কথার অবাধ্য হলেই নাকি সেখানে চলত নির্যাতন। ‘অনৈতিক সম্পর্কে’র মাধ্যমে তিনি সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সঙ্গেই করেছেন সখ্য।

মেহনাজ মিশু নিজেকে ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিতেন। যদিও যুব মহিলা লীগের কোনো কমিটিতে তিনি নেই বলে দাবি করেছিলেন সংগঠনটির সভাপতি ডেইজি সারওয়ার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করতেন মেহনাজ মিশু। তার বিরুদ্ধে এক নারীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টার অভিযোগে মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া ওই নারীকে জোরপূর্বক নেশাদ্রব্য খাইয়ে পাঁচ তলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে পরিবার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গুরুতর আহত হয়ে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারীর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে মেহনাজ মিশুকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র করে ছবি সংরক্ষণ, অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টাসহ নেশাদ্রব্য খাইয়ে পাঁচ তলার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া যায় মামলার এজাহার থেকে।

এ বিষয়ে যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারওয়ার গণামধ্যমকে জানান, মেহনাজ তাবাচ্ছুম মিশু যুব মহিলা লীগের কেউ নয়। তিনি আমার স্বাক্ষর নকল করে ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিতেন। তার বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফি গণমাধ্যমকে বলেন, অপরাধী যেই হোক না কেন কোনো ছাড় নয়। মামলা হয়েছে। আমরা রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে প্রেরণ করেছি।

সাভার মডেল থানা পুলিশ পরিদর্শক দ্বীপক চন্দ্র সাহা বলেন, তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করে দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে অভিযোগ করলে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা নিয়ে আসামি গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছি।

news24bd.tv/আইএএম