বঙ্গবন্ধুকন্যার মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে ফেরার গল্প! 

সংগৃহীত ছবি

বঙ্গবন্ধুকন্যার মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে ফেরার গল্প! 

অনলাইন ডেস্ক

সেদিন (২১ আগস্ট, ২০০৪) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ যেন রূপ নিয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। শত শত নেতাকর্মী শরীরে গ্রেনেডের স্প্রিন্টার নিয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি। কারও দিকে করোর তাকানের খেয়াল নেই। তবে কঠিন এ সময়েও তারা ভুলে যাননি প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কথা।

মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের মধ্যেও আওয়ামী লীগের নেতারা মানববর্ম তৈরি করে তাকে আগলে রাখেন। স্পি­ন্টারের আঘাতে নেতাদের শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়। তবে কোনো স্পি­ন্টার ছুঁতে পারেনি তাদের নেত্রীকে। এভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডিকে ১৬১ ধারায় শেখ হাসিনার দেওয়া জবানবন্দি, গ্রেনেড হামলার কিছুক্ষণ পর বিবিসিকে দেওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতির টেলিফোন সাক্ষাৎকার এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের বর্ণনায় সেদিনের ভয়াবহতার কথা উঠে আসে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী সিআইডিকে দেওয়া তার জবানবন্দিতে বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টায় আমি সুধাসদন থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের র‌্যালির উদ্দেশে রওয়ানা হই। আমার গাড়িবহর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছার পর আমি মঞ্চ হিসাবে ব্যবহৃত ট্রাকে উঠি। ট্রাকের অবস্থান ছিল আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ গজ পূর্বদিকে। ট্রাকটি পূর্বমুখী অবস্থায় ছিল। ট্রাকের পেছনের দিকে রক্ষিত কাঠের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে মুখ করে আমি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখি। বিকাল ৫টা ২২ বা ২৩ মিনিটে আমার বক্তৃতা শেষ হয় এবং আমি ট্রাক থেকে নিচে নামার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলাম। এ সময় ফটোসাংবাদিক গোর্কি (এসএম গোর্কি) আমাকে জানায়, সে ছবি নিতে পারেনি। যখন আমি তাকে ছবি নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য একটু থামি, ঠিক তখনই সম্ভবত দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে একটি বিস্ফোরণের শব্দ হয়। সমূহ বিপদ বুঝতে পেরে আমরা যারা ট্রাকের ওপর ছিলাম, সবাই মাথা নিচু করে শুয়ে, বসে পড়ি। এরই মধ্যে পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। ট্রাকে অবস্থানরত নেতারা মানববর্ম তৈরি করে আমাকে রক্ষা করার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করেন। বিস্ফোরণ একটু থামলে কর্মীরা আমাকে বুলেটপ্রুফ জিপ গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। আমি জিপের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় আবারও বিম্ফোরণ শুরু হয়। আমাকে টেনে ট্রাকে রক্ষীদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পুনরায় মানববর্ম তৈরি করে নেতাকর্মীরা আমাকে রক্ষা করার জন্য তৎপর হন। এরপর একপর্যায়ে আমাকে বুলেটপ্রুফ জিপে তোলা হয়। সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার সময় আমি সুধাসদনে পৌঁছাই।

news24bd.tv/আইএএম