অসহায় নারীদের জীবনে আলোর মশাল বসুন্ধরা গ্রুপ

অসহায় নারীদের জীবনে আলোর মশাল বসুন্ধরা গ্রুপ

অনলাইন ডেস্ক

১৯ বছর বয়সী আফসানা খাতুন। প্রায় সাত বছর আগে ছোট বোনের জন্মের সময় মা মারা যান। বাবা রাজমিস্ত্রির সহযোগীর কাজ করেন। সব সময় তাঁদের অভাব-অনটন লেগেই থাকে।

অল্প বয়সে বাবা তাঁকে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেন। বিয়ের এক বছর পরেই আফসানার স্বামী ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়েন। নিজের ভিটাবাড়িও বিক্রি করতে হয় ব্যবসার ক্ষতিপূরণ দিতে। বাড়িহারা হওয়ার পর ননদ এক পুরনো টিনের চালাঘরে থাকতে দিলেন।

বৃষ্টির দিনে টিনের চালার ফুটো দিয়ে পানি পড়ে ঘরের সব কিছু ভিজে যায়। স্বামী, শাশুড়ি ও দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করেন আফসানা। কোনো উপায় না পেয়ে পরিবার ও সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মানুষের বাড়িতে কাজ শুরু করেন। একদিন জানতে পারেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বিনা মূল্যে সেলাইয়ের কাজ শেখাচ্ছে।

মানুষের বাড়িতে কাজ করার পাশাপাশি প্রতিদিন আফসানা সেলাইয়ের কাজ শিখতে শুরু করলেন। পরে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। সেলাই মেশিন পেয়ে আবেগাপ্লুত আফসানা বলেন, ‘ভেবেছি সেলাইয়ের কাজ শিখে পরিবারের পাশে দাঁড়াব। ভয় ছিল কিভাবে সেলাই মেশিন কিনব। এত টাকা তো আমার নেই। বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের সেলাই মেশিন দিল। আজকে আমি অনেক খুশি। এখন আমার আর কোনো চিন্তা নেই। ’

আফসানার মতো আরেক সংগ্রামী নারী মোসাম্মত আলিয়া। সেলাই মেশিন দিয়ে বাজারের ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতেন তিনি। স্বামী ও তাঁর আয়ে ভালোই চলছিল সংসার। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, কিছুদিন আগে ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাঁদের। কোনো রকমে আলিয়া ও তাঁর স্বামী সন্তান নিয়ে ঘরের বাইরে বের হন। লোকজন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও কোনো কিছুই আর উদ্ধার করতে পারেনি তারা। খাট, শোকেস, আলমারিসহ জামাকাপড় ও জমানো টাকা সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আলিয়ার শখের সেলাই মেশিনটাও ঘরের সঙ্গে পুড়ে যায়। মাথা গোঁজার জন্য দেবর তাঁদের টিনের দোচালা ঘর দিয়েছেন। কিন্তু দুই সন্তানের পড়ালেখা ও নিত্যদিনের খরচ জোগানো তাঁর স্বামীর একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। সেলাই মেশিন চালাতে জানলেও বাজারের ব্যাগ ছাড়া তেমন কোনো সেলাইয়ের কাজ জানতেন না আলিয়া।

বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নতুন করে সেলাইয়ের কাজ শেখেন। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আলিয়াও একটি সেলাই মেশিন পান। সেলাই মেশিন পেয়ে আলিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এই উপকার আমি জীবনেও ভুলব না। দুঃসময়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। কোটি কোটি দোয়া তাদের জন্য। ’

এই রকম আরও টপিক