নাটোরে ধর্ষণের পর স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা, গ্রেপ্তার ১

নাটোরে ধর্ষণের পর স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা, গ্রেপ্তার ১

 নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষণে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত জাহিদ খাঁ’কে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৫। শুক্রবার রাতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার বেলা ১১টায় নাটোর র‌্যাব অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার অভিযানে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-৫ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের যৌথ বিশেষ অপারেশন দল ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার হেলেঞ্চা এলাকায় এক অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামি জাহিদ খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অভিযুক্ত আসামিকে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিশুর দাদি জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে ছোট ছেলের ঘরের ওই নাতনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।

তার প্রকৃত বয়স ১২-১৩ বছর। মেয়ের বাবা-মা পৃথক সংসার করায় ওই নাতনি তার কাছেই থাকে। তিনি মাঠে কাজ করে সংসার চালান।

তিনি জানান, অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ প্রতিবেশী দাদা হয়। সে প্রায়ই তার সঙ্গে কটু কথা বলে। বিষয়টি জানতে পেরে শিশুর দাদি ওই প্রতিবেশীকে বকাঝকা করে তার নাতনির সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। ওই ঘটনার কিছুদিন পর গত বছরের নভেম্বর মাসে তাকে ধর্ষণ করে।  

এরপর কাউকে বললে তাকে জবাই করবে-বলে ভয় দেখায়। ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর শরীরের নানা পরিবর্তনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শিশুটি পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি খুলে বলে। এরপর পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গত ১৮ জুন থানায় মামলা দায়ের করেন। এখন তার নাতনি সন্তানসম্ভবা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ সেপ্টেম্বর সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থাসহ পরবর্তী নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে তার সিজারিয়ানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় বলেন, শিশুটিসহ ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে আসেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়সে মা হতে গিয়ে নানা সমস্যা হতে পারে। সে কথা চিন্তা করে সরকারিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।