খালেদা-তারেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ: শেখ পরশ

সংগৃহীত ছবি

খালেদা-তারেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ: শেখ পরশ

অনলাইন ডেস্ক

আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, খালেদা জিয়া এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করে দণ্ডিত আসামি। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ২১ আগস্ট ও মানি লন্ডারিং মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সেই লন্ডারিংয়ের টাকা বিদেশ থেকে উদ্ধার করে ফেরতও আনা হয়েছে। সুতরাং, এ ব্যাপারটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার-তারা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ।

আগামী ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শুভ উদ্বোধন কার্যক্রম ও সুধী সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে আজ সোমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সভায় বিএনপিকে নিয়ে শেখ পরশ বলেন, বর্তমান জটিল রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির কোনো নেতা রাষ্ট্র পরিচালনা করার কোনো যোগ্যতা নাই, দক্ষতা নাই, সক্ষমতা নাই। না আছে খালেদা জিয়ার, না আছে তার গুণধর পুত্র তারেক জিয়ার। তারা দুজনেই অযোগ্য। শুধুমাত্র অযোগ্য তা না, দক্ষতার অভাবও অযোগ্যতার অন্যতম কারণ।  

তিনি আরও বলেন, আজকের এই পর্যায়, এই মধ্যম আয়ের দেশ পরিচালনা করতে যেই যোগ্যতা লাগে, তাদের তা নাই। এই যোগ্যতা অর্জন করতে হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতা থাকতে হয়। দক্ষতা নাই বলে নেতিবাচক রাজনীতির দিকে বিএনপি ধাবমান। তাই তারা এ দেশকে ধ্বংস করার এজেন্ডা হাতে নিয়েছে। ভেবেছে হত্যা, ক্যু, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বিদেশি প্রভুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। কিন্তু বিদেশি প্রভুরা বলে দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে তাদের বলার কিছু নাই, তারা হস্তক্ষেপ করবে না।

এদিকে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন কার্যক্রম নিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ২ সেপ্টেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে এক বিশাল সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এটা নিশ্চয়ই আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের ব্যাপার। একদিকে এই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেমন আওয়ামী লীগ সরকারের চলমান উন্নয়নের আরেকটা বিশাল মাইলফলক, অন্যদিকে যুবলীগের কর্মী হিসেবে আমাদের জন্য নেত্রীর সমাবেশ সফল করার সুযোগ এবং তার দিকনির্দেশনা সম্পন্ন বক্তব্য শুনতে পারা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার বলে আমরা মনে করি। তাই তার এই সমাবেশটি সফল করার লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা যুবলীগ এই সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শন এবং সহযোগিতা দিয়ে এই সমাবেশটি বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত করবো।

তিনি আরও বলেন, এই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরের পাশ্ববর্তী সকল জেলা উপকৃত হবে। ২ সেপ্টেম্বরের এই সুধী সমাবেশ থেকে তিনটি বিষয় প্রতিষ্ঠিত হবে, (১) বিশ্বমন্দা মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বব্যাপী আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা এবং সফলতা; এবং সঙ্গত কারণে তার প্রতি বিশেষ করে ঢাকা বিভাগের জনগণের আকর্ষণ এবং অকৃত্রিম ভালবাসা। (২) যেকোনো নির্বাচনে ঢাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লোকে বলে, যে দল ঢাকায় ভাল ফলাফল করে, সেই দলই নির্বাচন জয়ী হয়। তাই এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রিয় নেত্রীকে আশ্বস্ত করতে চাই, ঢাকা থেকে তিনি আগামী নির্বাচনে সর্বউৎকৃষ্ট ফলাফল আশা করতে পারবে। (৩) তার বিশ্বস্ত এবং শক্তিশালী ভ্যানগার্ড হিসাবে যুবলীগের সর্বোচ্চ ভূমিকা প্রমাণ করবে যে যুবলীগ শুধু এই সমাবেশ না, যেকোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নে সর্বশক্তি দিয়ে আত্মনিয়োগ করবে এবং আগামী নির্বাচনে নৌকার জয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ জননেত্রীর শক্তিশালী ভ্যানগার্ড হিসেবে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

শেখ পরশ আরও বলেন, এই সুধী সমাবেশ সফল করার জন্য আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা আমরা চাচ্ছি। আজকের এই প্রস্তুতি সভার পর আপনারা নিজ নিজ ইউনিট এবং এলাকায় গিয়ে সর্বোচ্চ এবং সর্ব উৎকৃষ্ট প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। এই সমাবেশকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে হবে। এই সমাবেশে শক্তি প্রদর্শন এবং জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা বিরোধী শক্তিকে জানাতে চাই যে, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ থাকবে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী যুবলীগের দখলে। তাই আমার নির্দেশ, আপনাদের সর্বোচ্চ জনবল নিয়ে এই সমাবেশে যোগদান করার প্রস্তুতি আজ থেকেই আপনারা নিবেন।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সুধী সমাবেশকে সফল করতে যুবলীগের এই আয়োজনকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা লক্ষ্য করেছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো বড় বড় সমাবেশ করছে। এই জনসমাবেশগুলো করা হয় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য। আপনারা জানেন, বিএনপি-জামাতের শাসনামালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর কী অমানবিক অত্যাচার চালিয়েছে। যুবলীগের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে পার্টি অফিসে ঢুকে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। বাড়ি ঘরে থাকতে দেওয়া হয় নাই। কিন্তু এই ১৫ বছরে বিএনপির নেতারা আছে সবচেয়ে সুখে। তারা তাদের এসি রুমে ঘুমায়, আরাম আয়েশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে বিপদে ফেলতে তারেক রহমান যেকোনো সময় খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। কারণ তারেক রহমান একজন বীভৎস মানুষ। যেকোনো জঘন্য কাজ করতে পারে। এজন্য যুবলীগকে সদা সর্বদা সজাগ থাকতে হবে যেন বিএনপি-জামাত কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করতে না পারে।

সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রতিটি পদক্ষেপই এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, এদেশের উন্নয়নের জন্য। স্বপ্নের পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল, স্বপ্নের মেট্রোরেল, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সর্ব সাধারণের জন্য সর্বজনীন পেনশন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আজ বাস্তবায়িত।

তিনি আরও বলেন, খুনি জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার এদেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে, দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে, ছাত্র-সমাজ-যুবসমাজ ধ্বংস করেছে অস্ত্র দিয়ে, অবৈধ টাকা দিয়ে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল এদেশের সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে। শুধু তাই নয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, ধর্ষণ, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে বিএনপি-জামাত।

তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা মুখী ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি-জামায়াত। আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মহাসমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে যুবলীগ।

এই রকম আরও টপিক