বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড জঘন্য ও নৃশংস: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী 

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড জঘন্য ও নৃশংস: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, অগ্নি সন্ত্রাস থেকে রক্ষা পেতে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণকে কিছুটা কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে বটে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে আগে সন্তানের জীবন ও নিরাপত্তা; তারপর হচ্ছে জীবিকা।

তাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এবং সুখী, সমৃদ্ধ ও নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনে এ সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনতেই হবে। আমাদের অনাগত ভবিষ্যৎ আমাদেরকেই রচনা করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব (প্রধান) মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সংস্কৃতি বিষয় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি বলেন, পৃথিবীতে বহু রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু এসব হত্যাকাণ্ডে কোথাও কোনো নারী-শিশুকে স্পর্শ করা হয়নি। এমনকি কারবালার করুণ হৃদয় বিদারক ঘটনায়ও কোনো নারী-শিশুকে হত্যা করা হয়নি। শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে খুনি ঘাতকচক্র কোনো নারী-শিশুকে রেহাই দেয়নি। তাই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য ও নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছেন। শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্য বিসর্জন দিয়েছেন এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য। এত ত্যাগ-তিতিক্ষার পরও বাঙালি নামধারী কিছু ঘাতক চক্র তাঁকে হত্যা করল। কী অপরাধ ছিল তাঁর?

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অসীম কুমার দে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার মো. দাউদ মিয়া এনডিসি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী নুরুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি সচিব বলেন, আমরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস পড়েছি, জেনেছি ও বুঝেছি। সুতরাং কেউ আমাদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ভুল বোঝাতে পারবে না, ভুল ইতিহাস শেখাতে পারবে না।  

খলিল আহমদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রওনক জাহান রচিত 'Pakistan Failure in National Integrity' বইটি পড়েছি যেখানে বঙ্গবন্ধুর অবদান, স্বাধীনতার জন্য তাঁর আজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা সুনিপুণভাবে বিধৃত হয়েছে। সচিব বলেন, সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ঘৃণা করার জন্য ঘৃণাস্তম্ভ নির্মাণের। তিনি বলেন, হজের সময় আমরা যেমন শয়তানকে ঘৃণা করে তার প্রতি পাথর ছুঁড়ে নিক্ষেপ করি, ঘৃণাস্তম্ভের মাধ্যমে আমরা তেমনিভাবে জাতির পিতার খুনিদের প্রতি আমাদের ঘৃণা প্রকাশ করতে পারি।

অনুষ্ঠানে কবি কামাল চৌধুরীর 'টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে' শীর্ষক কবিতা আবৃত্তি করেন অগ্নি অতুলনীয় নুর। তাছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে ও আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী এর আগে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর আয়োজিত রচনা ও শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন।