আইন সবার জন্য সমান, হোক সে নোবেল জয়ী : শেখ পরশ

ফাইল ছবি

আইন সবার জন্য সমান, হোক সে নোবেল জয়ী : শেখ পরশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আইন সবার জন্য সমান। সে নোবেলজয়ী হোক, আর যেই হোক। নোবেল জয় করে ট্যাক্স ফাঁকি দেবেন সেটা তো হতে পারে না।

বুধবার (৩০ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে '১৫ই আগস্টের শহীদদের স্মরণে' অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন পরশ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরশ বলেন, শেখ হাসিনার চিন্তা এদেশের মানুষের সেবা করার জন্য।

কোন উন্নত দেশেও এই ধরণের জনহিতৈষীমূলক কার্যকলাপ থাকে না, তাদের শুধু চাকুরীজীবীদের জন্যই পেনশন পরিকল্পনা থাকে।

তিনি বলেন, আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল নাগরিকদের সম্পৃক্ত করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার আর একটি জনহিতকর কাজ সেটা হলো গৃহহীন মানুষকে আশ্রয়ণ কর্মসূচির মাধ্যমে ঘর-বাড়ি তৈরি করে দেওয়া। প্রায় ৩৫ লক্ষ গৃহহীন মানুষকে এ সেবা দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও অস্থায়ী আশ্রয় দেয় কিন্তু এ রকম জমি দিয়ে ঘর-বাড়ি বানিয়ে দেওয়া আর কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান করেছেন কি না আমার সন্দেহ আছে।

শেখ পরশ বলেন, এখন শেখ হাসিনার স্বপ্ন আপনাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা। যেন আপনাদের ছেলে-মেয়েরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও প্রযুক্তি মোকাবিলা দক্ষতার সাথে করতে পারে সে লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বরের আওয়ামী লীগের জনসভা পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের নেতা-কর্মীরাই কানায় কানায় পূর্ণ করে দিবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলে যানজট নিরসন হবে, মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলা ফেরা করতে পারবে। সুতরাং মানুষের কর্ম যদি কথা বলে তাহলে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। তিনি ঢাকা শহর থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছেন তার ফল এদেশের জনগণ দেবেন।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামাতের আমলে লুটপাট, হত্যা, রাহাজানি ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার, এগুলো ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে তাদের অপারেশন ক্লিনহার্ট করতে হয়েছিল কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে চুরি, লুটপাট, রাহাজানি নাই যার কারণে অপারেশন ক্লিনহার্টের প্রয়োজন হয় না। মানুষের যদি সদিচ্ছা থাকে, দেশের প্রতি ভালবাসা মমত্ববোধ থাকে, দেশের মানুষের প্রতি যদি দায়বদ্ধতা থাকে তাহলে সব অসাধ্য সাধন করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের জন্য ১/১১ এর কুশীলবরা সোচ্চার, তারা একদিকে সোচ্চার অন্য দিকে বিএনপি-জামাতের মিথ্যাচার। যারা সুদখোর, যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেয়, যারা গরীবের টাকা আত্মসাৎ করে এবং তাদের বিচার করতে গেলে ঐ বিদেশি প্রভুরা চিঠি দেয়। দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ন্যাক্কারজনক হস্তক্ষেপ করা এটা কোন সভ্যতা? যারা সভ্যতার ছোবক দেয় তারা আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কিভাবে ন্যাক্কারজনকভাবে হস্তক্ষেপ করে। আমাদের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, বিচারালয়ের যে রায় সেই রায়ের বিরুদ্ধে তারা কিভাবে হস্তক্ষেপ করে? তাদেরকে কি সভ্যতার ABCD স্মরণ করিয়ে দিতে হবে?

যুবলীগ সভাপতি বলেন, আইন তো সবার জন্যই সমান, সে নোবেল জয়ী হোক আর যেই হোক। নোবেল জয়ী হবে আর শ্রমজীবী মানুষকে ঠকাবেন, নোবেল জয়ী হবেন আর দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দিবেন, এটা তো হতে পারে না। নোবেল জয়ীর জন্য কি অন্যরকম আইন বাংলাদেশে? সুতরাং আমি ঐ সকল সভ্য সমাজের প্রবর্তক এবং বিবেকবান মানুষদের বলবো শিষ্টাচার রক্ষা করেন। সব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করবেন না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আগস্ট মাসের প্রথম দিন থেকে মানুষের মাঝে মসজিদ-মন্দিরে, মাদ্রাসায়, এতিমখানায় সাধারণ মানুষের কাছে ১৫ই আগস্টের শহীদদের জন্য দোয়া চেয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এবং বাংলাদেশকে চোরের জাতি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য যারা উঠে পড়ে লেগেছে তারা হলেন বিএনপি-জামায়াত। তারা ’৭১-এর পরাজিত শক্তি, তারা ’৭১-এর স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল, দেশকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে। ’৭৫-এর ১৫ই আগস্ট তাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান খুনি জিয়াউর রহমান মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছে তাদের দল বিএনপি-জামাত আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জের মানুষগুলো যারা গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে থাকে তাদের সুদের টাকা বিদেশে পাচার করেছে তারা আজ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আপনারা জানেন পদ্মা সেতুকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্র ছিল সেই ষড়যন্ত্রের সাথে বিএনপি-জামায়াতের পাশাপাশি আরেকটি নাম জড়িত ছিল সেই লোকটি হল ড. ইউনূস। তারা ষড়যন্ত্র করে সফল হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক আমাদের টাকা দেয় নাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে আমাদের নিজেদের অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন।

নিখিল বলেন, আজ সেই বিএনপি-জামায়াত ড. ইউনূসকে নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আবারও ষড়যন্ত্র করছে। তিনি মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ড. ইউনূস কীভাবে বাংলাদেশের সুর্যসন্তান হোন? যিনি স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে বাঁধা প্রধান করেছেন, যিনি এদেশের গরীব মানুষের কাছ থেকে সুদ খান, সুদের টাকা না দিতে পারলে তাদের ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে গেছেন তিনি কিভাবে দেশের সূর্যসন্তান হয়? এখন পরিষ্কার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র সেই ষড়যন্ত্রের মূলনায়ক বিএনপি-জামায়াতসহ ড. ইউনুস।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক