‘আমার স্বপ্ন চুরি হয়ে গেল’

সংগৃহীত ছবি

‘আমার স্বপ্ন চুরি হয়ে গেল’

অনলাইন ডেস্ক

একদিন পার হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও সন্ধান মেলেনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুরাতন ভবনের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে চুরি হয়ে যাওয়া নবজাতকের।

তিনদিন বয়সী নবজাতক আব্দুল্লাহর শোকে কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানিও যেন শুকিয়ে গেছে হিরন ও শাহিনা দম্পতির। তাদের সান্ত্বনা দিতে হাসপাতালে আসা স্বজনরাও ক্রমাগত কান্নাকাটি করছে।

সন্তানকে হারিয়ে রাজমিস্ত্রি হিরন বলেন, বাচ্চা নিয়ে আমার খুব স্বপ্ন ছিল। আমার সেই স্বপ্ন চুরি হয়ে গিয়েছে। এদিকে পুলিশ বলছে, শিশুটি উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তারা।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালটির ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত এক নম্বর বিছানায় শুয়ে আছেন নবজাতকটির মা শাহিনা বেগম।

তাকে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছেন তার স্বজন এবং ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীর লোকজন।

এ সময় কথা বলতে গেলে শাহিনা বলেন, আমার বাচ্চা আমি ফেরত চাই। আর কিছুই চাই না। আমার বাচ্চা আমার কোলে আইনা দেন।

শিশু আব্দুল্লাহর বাবা রাজমিস্ত্রি হিরন মিয়া বলেন, কোনো রোগীর লোক অথবা হাসপাতালেরই কেউ এই চুরির সঙ্গে জড়িত। হাসপাতালে এতো আনসার সদস্য, সিসি ক্যামেরা, তারপরও কীভাবে বাচ্চা চুরি হয়েছে?

এদিকে, শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাচ্চা চুরির ঘটনায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শিশুটির বাবা হিরন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ২ (০১-০৯-২০২৩)। বাচ্চাটি উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ভোলা সদর উপজেলার এই দম্পতির বিয়ে হয় দেড় বছর আগে। সম্পর্কে তারা মামাতো-ফুপাতো ভাইবোন। আব্দুল্লাহ তাদের প্রথম সন্তান।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর রূপনগরের বাসা থেকে শাহিনাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ঘুমন্ত শাহিনার পাশ থেকে চুরি হয় তার সেই তিনদিন বয়সী নবজাতক আব্দুল্লাহ।

দুপুরের দিকে হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, বাচ্চা চুরির ঘটনায় আমরাও মর্মাহত। মায়ের কোল খালি হয়েছে এটা যে কতটা কষ্টকর আমরাও বুঝতে পারছি।  

এই চুরির বিষয়ে হাসপাতাল তরফ থেকে যত কিছু করার দরকার সবই করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয় হাসপাতাল থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক