বাচ্চার খাবার খেয়ে ফেলায় শিশু গৃহকর্মীকে হত্যা

সংগৃহীত ছবি

বাচ্চার খাবার খেয়ে ফেলায় শিশু গৃহকর্মীকে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর কলাবাগানে গৃহকর্ত্রী সাথী পারভীন ডলির বাচ্চার খাবার খেয়ে ফেলায় শিশু গৃহকর্মী হেনাকে (১০) নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আশরাফ হোসেন।

তিনি বলেন, রাজধানীর কলাবাগানে শিশু গৃহকর্মী হেনা গৃহকর্ত্রী সাথীর বাচ্চার খাবার মাঝে মধ্যে খেয়ে ফেলতো। আর এর জন্য নির্যাতন করে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যা করে গৃহকর্ত্রী মোছা. সাথী পারভীন ডলি।

আশরাফ হোসেন জানান, গত ২৫ আগস্ট সকালেও হেনাকে নির্যাতন করা হয়। শিশুটি মারা যাওয়ার পর পালিয়ে যান গৃহকর্ত্রী সাথী। পরে মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করতে থাকে গৃহকর্ত্রী সাথী। পরে একসময় যশোরে চলে যায় সাথী।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শিশু গৃহকর্মীটিকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করা হয়েছে। গৃহকর্ত্রীর বাচ্চার খাবার খাওয়ায় নির্যাতন করা হতো। অনেক সময় গৃহকর্ত্রীর বাচ্চার সাথে খেলাধুলা করত হেনা। এসময় কোনো কারণে তার বাচ্চার সাথে হেনার মারামারি হলেও নির্যাতন করা হতো। আর নির্যাতনের মাত্রা এমন ছিল যে বিছানায় মলত্যাগ করে ফেলত।

জানা যায়, হেনা ময়মনসিংহ মুক্তগাছা উপজেলা নন্দীবাড়ি গ্রামের মৃত হক মিয়া ও মৃত হাসিনা বেগমের মেয়ে। তিন বছর আগে গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একটি ট্রেনিংয়ে যান। সেখানে হেনাকে দেখেন। তখন তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সাথী আক্তার। সেসময় হেনার স্বজনদের গৃহকর্ত্রী সাথী বলেছিলেন- হেনাকে তার নিজের সন্তানের মতো করে রাখবেন।

এরপর মাস শেষে ২ হাজার টাকা করে হেনার ফুফুর কাছে পাঠাবেন। চার মাস এভাবে টাকা পাঠালেও এরপর থেকে আর কোনো টাকা পাঠাননি। হেনার জন্য টাকা আলাদাভাবে জমিয়ে রাখছেন বলে তখন তাদেরকে জানান। গত ২৬ আগস্ট দুপুরে কলাবাগানের ভূতের গলির একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী হেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল দেখে ধারণা করা হয়- তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ। এতে সাথী আক্তার পারভীনকে আসামি করা হয়েছে।