জটিলতার ফাঁদে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ

সংগৃহীত ছবি

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি

জটিলতার ফাঁদে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ

অনলাইন ডেস্ক

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগে ফের আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বেশি নম্বর পেয়েও প্রাথমিক সুপারিশ বঞ্চিত এক প্রার্থীর করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাস স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। ৩১ আগস্ট রিট এবং স্থগিতাদেশের কাগজপত্র বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সচিবের দপ্তরে পৌঁছেছে।

এনটিআরসিএর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান এবং পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যায়ন বিভাগের দুজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, কিশোরগঞ্জের সাবেকুন নাহার নামে একজন নিবন্ধনধারীর নম্বর ছিল ৬৩।

তার আবেদন করা পদে ৬১ নম্বর পাওয়া নিবন্ধনধারীকে প্রাথমিক সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই প্রার্থী হাইকোর্টে রিট করেন। আদালত রিটের শুনানি নিয়ে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন, যার নথিপত্র এরই মধ্যে এনটিআরসিএ সচিব দপ্তরে পৌঁছেছে।

এর আগেও শিক্ষক নিয়োগে আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল।

তখন বরিশালের একজন প্রার্থী চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশ না পেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেছিলেন।

এদিকে, এবার উচ্চ আদালতে অবকাশ শুরু হওয়ায় রিটের স্থগিতাদেশের ওপর শুনানির জন্য তারিখ পাওয়া কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করছেন এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা। চেম্বার জজ আদালতে একটি শুনানির ব্যবস্থা করতে না পারলে প্রার্থীর রিটের কারণে আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। সেক্ষেত্রে কিছুই করার থাকবে না এনটিআরসিএর। ফলে প্রার্থীরা আন্দোলনে নামলেও আইনি জটিলতা দূর না হওয়া পর্যন্ত ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ আটকেই থাকবে।

এদিকে, নিয়োগে আদালতে স্থগিতাদেশের বিষয়টি এনটিআরসিএ কর্মকর্তা মৌখিকভাবে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের প্রতিনিধিদেরও জানিয়েছেন। তবে শিগগির আইনি জটিলতা মিটিয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ করার আশ্বাসও দিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে ‘চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী ফোরাম’-এর সহ-সভাপতি মো. ইমরান খান বলেন, আজকে আমরা মানববন্ধন করলাম। দাবি জানালাম- ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেন চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়। অথচ এরমধ্যে নতুন দুঃসংবাদ পেলাম। কর্মকর্তারা নতুন জটিলতার কথা জানালেন।

তিনি বলেন, এক প্রার্থী রিট করেছেন। ফলে আদালত নিয়োগ কার্যক্রম ছয়মাস স্থগিত রাখতে বলেছেন। কর্মকর্তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন- তারা জটিলতা নিরসনে কাজ শুরু করেছেন। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। আমরা ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি। জটিলতা সমাধান করে এ সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত সুপারিশের ব্যবস্থা না করলে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এর আগে বরিশালের একজন প্রার্থী চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশ না পেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেছিলেন। পরে রিট ও তার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের জারি করা রুলের কারণে চূড়ান্ত সুপারিশে জটিলতা হবে কি না, তা জানতে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সলিসিটরের মতামত চেয়েছিল এনটিআরসিএ। সেখান থেকে জটিলতা নেই জানানোর পর পুরোদমে কাজ শুরু করে এনটিআরসিএ।

এছাড়া সহকারী মৌলভী পদে প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত সুপারিশ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এই পদে প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া যেসব প্রার্থী ফাজিল পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ না করার কথা জানায় এনটিআরসিএ। তবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া সবাইকে সহকারী মৌলভী পদে চূড়ান্ত সুপারিশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগে চিঠি দেয়। এ নিয়ে বৈঠকও হয়েছে। তবে সেই জটিলতা কেটেছে কি না, তাও জানায়নি এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। গত ১২ মার্চ প্রাথমিক সুপারিশের ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেশের স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৩২ হাজারের বেশি প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়।

এর প্রায় দেড় মাস পর তাদের চূড়ান্ত সুপারিশের জন্য প্রথমবারের মতো অনলাইনে ভি-রোল ফরম পূরণের নির্দেশ দেয় এনটিআরসিএ। এরপর আরও দুই দফায় ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হয়।

news24bd.tv/AA