আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

সংগৃহীত ছবি

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

শরীয়তপুর সদর উপজেলার বুড়িরহাট বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বুড়িরহাট আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি জুম্মান বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক তাওসিফ আহম্মেদের অনুসারীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা ও দুই ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ও ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে বুড়িরহাট আঞ্চলিক ছাত্রলীগের একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির সভাপতি ইসলামপুরের বাসিন্দা জুম্মান বেপারী। আর সাধারণ সম্পাদক রূদ্রকরের দেওভোগ এলাকার তাওসিফ সরদার। বুড়িরহাট বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতার অভিভাবকদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।


 
গত শুক্রবার ঢাকায় ছাত্রলীগের মহাসমাবেশে ওই দুই নেতা আলাদাভাবে তাদের সমর্থকদের নিয়ে যোগ দেন। ঢাকা যাওয়ার পথে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে শনিবার জুম্মানের চাচা বুড়িরহাট বাজারের ব্যবসায়ী সামাদ বেপারীকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বুড়িরহাট বাজারে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।

ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এ ছাড়া ইয়াসিন বেপারীর হোটেলসহ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
 
সংঘর্ষে ইয়াসিন বেপারী (৪০), কালু বেপারী (৩৪), মোহাম্মদ আলী (৩০), হান্নান বেপারী (৩২), জুম্মন বেপারী (২৮), ইমন বেপারী (২৪), সিজান বেপারী (১৭), মালেক হোসেন (২৬), আতাউর রহমান (২০), আহাম্মদ আলীসহ (৩০) ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে আহাম্মদ আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

সদরের পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, স্থানীয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক ও রূদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মহব্বত খান ওরফে মাসুদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, জিয়া মোল্লা, ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নান্নু বেপারী, ওসমান বেপারী ও সৈয়দ জামিউল।  

বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুম্মান বেপারী বলেন, ‘তাওসিফের সঙ্গে জামায়াত-বিএনপির কিছু লোকজন আমার চাচা বুড়িরহাট বাজারের ব্যবসায়ী ইয়াসিন বেপারীসহ আমাদের বেশ কয়েকজনকে টেঁটা, রামদা ও সেনদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ও আমাদের কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। ’

বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওসিফ আহম্মেদ বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। বুড়িরহাটে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে শুনেছি। কী নিয়ে হয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি বা আমার কোনো লোক ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। ’

জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর বলেন, ‘মূলত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় একটি ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। এর সঙ্গে যদি ছাত্রলীগের কোনো কর্মী জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক