চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ, মারামারিতে আহত ১৮

বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খান

চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ, মারামারিতে আহত ১৮

অনলাইন ডেস্ক

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় নয়ন খান (৯৫) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ সময় নিহতের স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে মারামারির ঘটনায় দুপক্ষের অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুক্তিযোদ্ধার স্বজনেরা অভিযোগ করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খান সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অসুস্থতা নিয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

ভর্তির কিছু সময় পরে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে কোনো অক্সিজেন সরবরাহ করেননি চিকিৎসকেরা। কিছুক্ষণ পর বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনায় রোগীর স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রথমে বাকবিতণ্ডা এবং পরে মারামারিতে জড়ান। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও হাতাহাতিতে জড়ান।

এতে রোগীর স্বজনদের মধ্যে আলমগীর বিশ্বাস (২৮), তৌহিদ বিশ্বাস (২৫), আলিফ খান (১৪), হামজা খান (১২), জেসমিন (৪২), সাবিনা ইয়াসমিন (৫০), রেবাকা সুলতানা (৩৫)-সহ বেশ কয়েকজন আহত হন।  

নিহতের স্বজনেরা আরও বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলার হাত থেকে বাঁচতে হাসপাতালের বাথরুমে পালানোর পরও সেখান থেকে বের করে তাদের মারপিট করা হয়।  

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ, এ ঘটনায় পাবেল (২৬), ইজাজ (২৬), অর্নব (২৭), সাব্বির (২৬), রোকন (২৬), মাহমুদুল (২৬), মহিম (২৭), সাকিব (২৬), শামিম (২৬), ফরহাদ (২৬), ইশতেসহার (২৬)-সহ কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হন।  

ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা দেওয়ার সময় রোগীর স্বজনেরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে।  

এ ঘটনায় নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি আলমগীর বিশ্বাস, তৌহিদ বিশ্বাস, আলিফ খানকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তারা গুরুতর আহত হওয়ায় তাদের পুলিশি পাহারায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ জলিল বলেন, আমরা রাতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারামারির খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অমিত দেবনাথকে প্রধান করে জেলা পুলিশের একজন প্রতিনিধি ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের একজন প্রতিনিধিসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ  কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
news24bd.tv/আইএএম