টাকা আত্মসাত: ফারইস্ট ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৮ জনের নামে মামলা

টাকা আত্মসাত: ফারইস্ট ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৮ জনের নামে মামলা

অনলাইন ডেস্ক

পরস্পর যোগসাজশে বিশ্বাসভঙ্গ করে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন—ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক তাসলিমা ইসলাম (স্বামী-মো. নজরুল ইসলাম), সেলিম মাহমুদ, কোম্পানির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেমায়েত উল্যাহ, সাবেক প্রজেক্ট ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার আমির ইব্রাহিম, টিপু সুলতান, ফুয়াদ আশফাকুর রহমান ও মোহাম্মদ আলম খান।

আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় এবং আত্মসাতকৃত অর্থ গোপনের উদ্দ্যেশ্যে হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করে এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কমিশন।

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ২০১৫ সালে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ডের রমনা থানাস্থ কাকরাইল মৌজায় (হোল্ডিং নং-৭২, কাকরাইল) বিভিন্ন মালিকের কাছ থেকে ৮০০০ বর্গফুটের পুরাতন ভবনসহ ৩২ শতাংশ জমি ক্রয় করে। এর মধ্যে ২৮ শতাংশ জমি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের শ্বশুর মো. মফিজুল ইসলাম ও সম্বন্ধি মো. সেলিম মাহমুদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেমায়েত উল্লাহ ও প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার আমির ইব্রাহিমের সহযোগিতায় জমি ক্রয়ের সাধারণ নীতিমালা প্রতিপালন না করে, সার্ভে ফার্মের ইঞ্জিনিয়ার টিপু সুলতান, অ্যাডভোকেট ফুয়াদ আশফাকুর রহমান ও মোহাম্মদ আলম খানের সাথে পারস্পারিক সহযোগিতায় অন্যায় ও প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া সার্ভে রিপোর্ট সৃজন করে তিনি তার শ্বশুর মফিজুল ইসলাম ও সমন্ধি (স্ত্রীর ভাই) সেলিম মাহমুদের মালিকানাধীন ৭২, কাকরাইল মৌজার ২৮ শতাংশ জমি প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে কোম্পানির নামে দলিল নং-২৯৯৫, ২০১৫ সালের ১২ মে ক্রয় করেছেন।

পরবর্তীতে নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী পরিচালক তাসলিমা ইসলাম, তার শ্বশুর মফিজুল ইসলাম ও সমন্ধি সেলিম মাহমুদের সাথে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সৃজিত রেকর্ডপত্রের ভিত্তিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ওই জমি ক্রয় করে এবং জমি বিক্রির ১১৫ কোটি টাকা প্রথমে তার স্ত্রী তাসলিমা ইসলামের ব্যাংক হিসাবে ও পরবর্তীতে তাসলিমা ইসলামের ব্যাংক হিসাব থেকে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।