এডিসি হারুনের যত বিতর্কিত কাজ

সংগৃহীত ছবি

এডিসি হারুনের যত বিতর্কিত কাজ

অনলাইন ডেস্ক

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে পেটানোর পর বিপাকে পড়েছেন রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদ। এর আগেও তাকে ঘিরে রয়েছে নানা বিতর্কিত ঘটনা। গত কয়েক বছরে ৩১তম বিসিএস-এর এই পুলিশ কর্মকর্তা একের পর এক নানা কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন।  

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মূলত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হওয়ার পর থেকেই অনেকটা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলেও এই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সবসময়েই তিনি পার পেয়ে গেছেন। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে থানায় নিয়ে বেধড়ক মারধরের পর রোববার তাকে রমনা জোনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

হারুন সাংবাদিকদের ওপর হামলা, শিক্ষার্থীদের মারধর, বাহিনীর কনস্টেবলকে মারধরসহ নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনেক সময় অতি উৎসাহী হয়ে নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।  

এর আগে রমনা জোনের দায়িত্ব পালন করা কাউকে নিয়ে এত বিতর্ক হয়নি। যদিও হারুন বিভিন্ন সময়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অথবা নিজের কাজের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের পিটিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি। পেটানোর আগে তার গায়ে জ্যাকেট এবং মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেন তার সহকর্মীরা। হেলমেট পরানোর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মারমুখো হয়ে ওঠেন।  

এর আগে নিজ সহকর্মীকেও চড় মেরে সমালোচিত হয়েছিলেন এডিসি হারুন। নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক, বিক্রেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের দিকে রাবারের বুলেট ছুড়তে এক কনস্টেবলকে নির্দেশ দেন তিনি। বুলেট শেষ বলায় তাকে চড় মারেন তিনি। ঘটনাটির একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন এই এডিসি।

গত বছরের ৪ মার্চ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ মিছিলে ঢাকা ক্লাবের সামনে রমনা জোনের উপকমিশনার হারুন-অর-রশীদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোক বিক্ষোভকারীদের ওপর অতর্কিত লাঠিচার্জ করে।

একই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে পুলিশ ছাত্রদলের ‘শান্তিপূর্ণ’ সমাবেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিচার চেয়ে শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্যান্য বাম সংগঠন আয়োজিত মশাল মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ। সেখানেও হারুন ছিলেন।

গত বছরের মাঝামাঝিতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের লাঠিপেটার ছবি তুলতে গিয়ে হারুনের অসদাচরণের শিকার হন কয়েকজন সাংবাদিক।

রোববার এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে। তাকে বলা হয়, এডিসি হারুন সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ী-সহকর্মীদের গায়ে হাত তুলেছেন। এখন পর্যন্ত তাকে কোনো ধরনের বিচারের সম্মুখীন হতে হয়নি-গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে এই ঘটনাটি প্রথম উল্লেখযোগ্যভাবে এসেছে। আমরা এটা দেখে নিই। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, অবশ্যই তিনি যতখানি অন্যায় করেছেন, ততখানি শাস্তি তিনি পাবেন।

news24bd.tv/আইএএম