আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে যা জানা গেল 

আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে যা জানা গেল 

অনলাইন ডেস্ক

আনুমানিক রাত সাড়ে ৩টা, বেকারি পণ্যের দোকান হক স্টোর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন রাতের নিরাপত্তা প্রহরীরা। দ্রুত তারা বিদ্যুতের প্রধান লাইনটি বন্ধ করে দেন। এরপর নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন। সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেন।

অন্তত ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম গাড়ি আসে ঘটনাস্থলে। নাইটগার্ড মো. দিলশাদ গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান।  

তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছার আগেই ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। হক স্টোরটিও বন্ধ ছিল।

বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে তার ধারণা।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ আগুন এখনো নেভেনি। সেখানে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে উদ্ধার সহায়তায় দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।  

এছাড়া আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অগ্নি নির্বাপনী সাহায্যকারী দল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
   
মার্কেটটিতে কাঁচা বাজার ছাড়াও পোশাক, স্বর্ণ, জুতাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের হাজারেরও বেশি দোকান রয়েছে। নিজেদের সম্পদ রক্ষায় ভোরেই মার্কেটে ছুটে যান ব্যবসায়ীরা। তারা আগুনের মুখ থেকে সম্পদ রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।   
এদিকে একের পর এক এসি বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে চারপাশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ থাকায় এবং এসির বিস্ফোরণে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ সময় পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় পানি সংকটে পড়েছে ফায়ার সার্ভিস।

আগুন নেভানোর দায়িত্বে থাকা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি সংকটের কারণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া দাহ্য পদার্থ থাকায় আশপাশে এলাকায় আগুন নেভানোর সঙ্গে সঙ্গে কালো ধোঁয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও যথাসাধ্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি ঘটনাস্থলের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। সবার সম্মিলিত চেষ্টা থাকলেও আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তিন ঘণ্টার আগুনে এরইমধ্যে পুড়ে গেছে মার্কেটের এক পাশের জুয়েলারি ও পোষাকের দোকান। আরেক পাশের সবজি ও মাছ-মাংসের দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।  

বুধবার দিবাগত (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৪টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, কল্যাণপুর ও হেডঅফিস থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন গণমাধ্যমকে জানান, রাত পৌনে ৪টায় আগুনের সংবাদ পেয়েই ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রাত ৩টা ৫২ মিনিটে। প্রথমে ৭টি ইউনিট কাজ করলেও আগুনের তীব্রতা বাড়ায় ইউনিট বাড়িয়ে ১৭টি করা হয়েছে।

তিনি জানান, আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসিনি। আগুনের প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবরও পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানা যাবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে যে জায়গায় আগুন লেগেছে সেখানে কাঁচা বাজার ছাড়াও পোশাক-আশাক, স্বর্ণ, জুতাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের হাজারেরও বেশি দোকান রয়েছে। সাপ্তাহিক বন্ধ হওয়ার কারণে আজ পুরো মার্কেট বন্ধ ছিল। আর ভোরবেলা আগুন লাগার কারণে লোকজন না থাকায় আগুন অনেকটাই দাউ দাউ করে বেড়ে যায়। আগুন লাগার খবর পাওয়ার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।

এদিকে আগুনের ঘটনা দেখতে ভোর থেকে উৎসুক জনতা ভিড় করেছে। পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারীও ভিড় জমিয়েছেন। ফলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে বেগ পেতে হচ্ছে। এতে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে ঠিক মতো কাজ করতে পারছেন না তারা।

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, মার্কেটের ব্যবসায়ী নয়, যারা বহিরাগত তারা এখানে এসে অযথাই ভিড় করছেন। অনেক দোকান থেকে মালামাল চুরি হয়েছে।

news24bd.tv/আইএএম