আবার উত্তাল সাগর, দুর্যোগ পিছু ছাড়ছে না জেলেদের

সংগৃহীত ছবি

আবার উত্তাল সাগর, দুর্যোগ পিছু ছাড়ছে না জেলেদের

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় বঙ্গোপসাগরে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে। সাগরে আছড়ে পড়ছে বিশাল বিশাল ঢেউ। ইলিশ আহরণ মৌসুমের শেষভাগে এসে জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ার সময়ে অশান্ত সাগরে টিকতে না পেরে জেলেরা নিরাপদ আশ্রয়ে সুন্দরবনসহ উপকূলের মৎস্য বন্দরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। লঘুচাপের কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সাগর আবারও অশান্ত হয়ে ওঠায় বুধবার ভোর থেকে জেলেরা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে থাকে।

সাগরে ৬৫ দিনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষে এবারের দুর্যোগ বিপদেই ফেলে দিয়েছে জেলেদের। গত দুই মাসে অশান্ত সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে টিকতে না পেরে ইলিশ আহরণে থাকা জেলেদের ফিশিং ট্রলার নিয়ে পাঁচবার উপকূলে ফিরে আসতে হয়েছে। সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক ও মৎস্য আড়তদাররা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মৎস্য বিভাগ বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপে বিশাল-বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ায় বুধবার ভোর থেকে বাগেরহাটের প্রায় এক হাজার ফিশিং ট্রলারসহ কয়েক হাজার ট্রলার বর্তমানে সুন্দরবনের নারকেলবাড়িয়া, দুবলার চর, ভেদাখালী, বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ফিশারীঘাটসহ শরণখোলা, রায়েন্দা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল, বরগুনার পাথরঘাটা, মহিপুর ও নিদ্রাছখিনা এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।

সাগরে ৬৫ দিনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষে চলতি ইলিশ মৌসুমে এনিয়ে কমপক্ষে পাঁচ দফা দুর্যোগে পড়েছেন জেলেরা।

শরণখোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য আড়তদার মো. কবির হাওলাদার জানান, বারবার প্রকৃতিক দুর্যোগ আর সাগরে মৎস্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। দুর্যোগ আমাদের পেছনে লেগেই আছে। যখনই ইলিশ পড়া শুরু করে, তখনই দুর্যোগ হানা দেয়। দুর্যোগের কারণে আমার আড়তের এফবি খায়রুল ইসলাম, এফবি মা-বাবার দোয়া, এফবি পুর্ণিমা, এফবি মায়ের দোয়া, এফবি জিসানসহ পাঁচটি ট্রলারে চলতি ইলিশ আহরণ মৌসুমে কম হলেও ৫০ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। আহরণ মৌসুমও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ বছর আর এই লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।

শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় টিকতে না পেয়ে কোনো ফিশিং ট্রলারই এখন সাগরে নেই। গত দুইদিনে হাজার হাজার ফিশিং ট্রলার সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। কয়েকদফা দুর্যোগে পড়ে সব সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক ও আড়তদার মহাজনেরা লাখ লাখ টাকা লোকসানে পড়েছেন।

news24bd.tv/SHS