দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের তদন্ত শেষ পর্যায়ে, যা জানালো ডিএমপি

সংগৃহীত ছবি

দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের তদন্ত শেষ পর্যায়ে, যা জানালো ডিএমপি

অনলাইন ডেস্ক

শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরে পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন-অর-রশীদ, পরিদর্শক মো. গোলাম মোস্তফা ও থানার কয়েকজন পুলিশের জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তদন্ত কমিটি। ওই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে তাদের সবাইকে এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রতিবেদন তৈরিও শেষ পর্যায়ে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল মঙ্গলবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (নিউ মার্কেট জোন) শাহেন শাহ গণামাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনায় যাদের নাম এসেছে তদন্তের প্রয়োজনে তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ’ রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনার সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। ’

তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ঘটনায় জড়িতদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে। ’

তিনি বলেন, এরই মধ্যে এডিসি হারুন, এডিসি সানজিদা আফরিন, পরিদর্শক মো. গোলাম মোস্তফা ও সেদিন শাহবাগ থানায় আরও যাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈম, শরীফ আহমেদ মুনিমসহ অন্যদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি বারডেম হাসপাতালের প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজও যাচাই-বাছাই চলছে।  

সূত্র জানায়, তদন্তে সেদিনের এডিসি হারুন ও পরিদর্শক মোস্তফা সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকায় ছিলেন। আহত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষ থেকে হামলায় ১০ থেকে ১৫ জনের অংশগ্রহণের কথা বলা হলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত আট থেকে ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে।  সূত্র আরও জানায়, যাকে ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত, সেই এডিসি সানজিদার বিভিন্ন বিষয়েও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের বক্তব্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে তদন্ত কমিটি।

গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। ঘটনা তদন্তে ডিএমপি সদর দপ্তরের উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।  

ওই ঘটনায় ডিএমপি সদর দপ্তরে কর্মরত এডিসি সানজিদা গত মঙ্গলবার মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর স্বামী মামুনই প্রথম এডিসি হারুনের গায়ে হাত তোলেন।

গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনায় এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।

সাময়িক বহিষ্কৃত এডিসি হারুনের স্থায়ী বহিষ্কার ও গ্রেপ্তার চান মারধরের শিকার আনোয়ার হোসেন নাঈম। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে এ কথা বলেন।  রোববার হাসপাতালে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনো তেমন ভালো নয়।

news24bd.tv/আইএএম