আদিল ও এলানের রায় নিয়ে ‘অপতৎপরতা’য় ১৫৫ নাগরিকের উদ্বেগ

সংগৃহীত ছবি

আদিল ও এলানের রায় নিয়ে ‘অপতৎপরতা’য় ১৫৫ নাগরিকের উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক

অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের দণ্ডাদেশ নিয়ে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলের বিবৃতির নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তার ও সাংবাদিকসহ দেশের ১৫৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী। একই সঙ্গে এসব গোষ্ঠীর অপতৎপরতা সম্পর্কে দেশের বিবেকবান নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

এসব বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভীর স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১৪ সেপ্টেম্বর অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে দুই বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে আদালত রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তারপরও একটি মহল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। আমরা মত প্রকাশের অধিকারকে সমুন্নত রাখা যেমন অপরিহার্য বলে মনে করি, তেমনি মত প্রকাশের অধিকারের অজুহাতে যেন মানবতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও তাদের সাম্রাজ্যবাদী দোসররা নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার সুযোগ না পায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই রায় প্রকাশের পর বিতর্কিত, উগ্রবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সুরে দেশি-বিদেশি কিছু সম্মানিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিবাদ করার বিষয়টি বিস্ময়কর।

 

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো - এসব ব্যক্তি ও সংগঠন বাংলাদেশের উগ্র সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর জন্য উদ্বিগ্ন হলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলহত্যাকাণ্ড, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা ও বিচারক হত্যার মাধ্যমে সারাদেশে জেএমবি কর্তৃক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম এবং নিরীহ মানুষ হত্যার বিষয়ে নিশ্চুপ থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, এসব দেশি-বিদেশি মহল বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ও উগ্র জঙ্গিবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক। সময়ে সময়ে তাদের তথাকথিত বিবেক জাগ্রত হয়।

এতে আরও বলা হয়, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে মতিঝিল, শাপলা চত্বর, পল্টন ও তার আশেপাশের এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ২০১৩ সালের ১০ মে  ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সমাবেশ ও মানবাধিকার’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।

উক্ত প্রতিবেদনে একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার লেখা, জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করা, অন্য ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের নাম এই তালিকায় সন্নিবেশ করাসহ কাল্পনিক ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করে ওয়েবসাইটে অতিরঞ্জিত ও অসত্য তথ্য প্রকাশ করে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টির মানসে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার লক্ষ্যে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগ এনে একই বছর সংস্থাটির বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়।

এই রকম আরও টপিক