১১৪ বছর বয়সে মৃত্যুর পর খাদ্যাভ্যাসের জন্য আজও আলোচিত যে ব্যক্তি

বার্নান্দো লাপালো (বামে) ও তার এক অনুরাগী।

১১৪ বছর বয়সে মৃত্যুর পর খাদ্যাভ্যাসের জন্য আজও আলোচিত যে ব্যক্তি

অনলাইন ডেস্ক

নাম তার বার্নান্দো লাপালো। তিনি দাবি করেন, ১৯০১ সালের ১৭ আগস্ট ব্রাজিলের ভিক্টোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি তার বাবার সঙ্গে আমেরিকায় পাড়ি জমান। এরপর থেকে সেখানেই বসবাস করেন।

 

যদিও তিনি দাবি করতেন, তার জন্ম ১৯০১ সালে। কিন্তু এর স্বপক্ষে তার কোনো প্রমাণ ছিল না। তবে সরকারি নথি অনুযায়ী, তার জন্ম ১৯১০ সালে। তবে তিনি দাবি করেন, তার জন্ম সাল ভুলক্রমে ১৯১০ লেখা হয়েছিল।

মূলত তিনি ১৯০১ সালেই জন্মগ্রহণ করেন।

তার জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার  মতো নানা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। বয়স বেড়েছে কিন্তু বার্নান্দো লাপালোর শরীরে তার তেমন কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তার দাবিকৃত জন্ম সাল অনুযায়ী, ১১৪ বছর বয়সে ২০১৫ সালে  মৃত্যুর হয় বার্নান্দো লাপালোর।

তবে বয়স যাই হোক, তার সুস্থ জীবনযাপনের জন্য মৃত্যুর পরও তিনি আলোচিত। এর পেছনে রয়েছে এক রহস্য, সেটি হচ্ছে তার খাদ্যাভ্যাস। তার দাবি, খাদ্যাভ্যাসের কারণে জীবনে কখনো অসুস্থ হননি তিনি। কী সেই খাদ্যাভ্যাস?

জানা গেছে, বার্নান্দো লাপালো পাঁচটি খাদ্য নিয়মিত গ্রহণ করতেন। এগুলো হচ্ছে- ১. রসুন, ২. র’ আনপ্রসেসড (কাঁচা প্রক্রিয়াজাত নয়) চকলেট, ৩. দারুচিনি, ৪. জলপাই ও জলপাই তেল এবং ৫. মধু।

১. রসুন: রসুন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ও  রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়ক ভূমিকা রাখে এই রসুন। রসুনে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে রসুন। এছাড়াও শরীর থেকে দূষিতা পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এটি।

২. র’ আনপ্রসেসড চকলেট: র’ বা কাঁচা চকলেট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তের সঞ্চালন উন্নত করতে পারে। এটি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এছাড়াও এর উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সূর্যরশ্মি, দূষণ, সিগারেট বা ধূমপান ইত্যাদি থেকে সৃষ্ট দূষিত পদার্থ, যা ক্যান্সার এবং হৃদরোগের কারণ হয়ে থাকে, এগুলো থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

৩. দারুচিনি: এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে। সেই শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা প্রশমন করে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তচাপ কমায় এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

৪. জলপাই ও জলপাই তেল: জলপাই, যা অলিভ নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এটি স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য। অলিভ অয়েল স্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। হৃদরোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সেই ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

৫. মধু: মধুতে বিভিন্ন ভিটামিন উপাদান রয়েছে। এটি অ্যান্টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। রক্তে সঠিক ও সুস্থ শর্করার মাত্রার জন্য ভাল এটি খুবই উপকারী। হৃদযন্ত্রের জন্য খুবই কার্যকরী উপাদান রয়েছে এতে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। পোড়া ও ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

news24bd.tv/desk