সাঈদীর জন্য দোয়া করে ইমাম বরখাস্ত

সাঈদীর জন্য দোয়া করে ইমাম বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্ক

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জন্য দোআ ও মোনাজাত করার অপরাধে গাংনী মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ঈমাম হাফেজ মাওলানা ইলিয়াছ হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী ঈমাম নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মডেল মসজিদের মোয়াজ্জিনকে ইমামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বরখাস্ত হওয়া ঈমাম মাওলানা ইলিয়াস হোসেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের মো. রমজান আলীর ছেলে।

জানা গেছে, মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বিগত ২০১৩ সাল থেকে গাংনী উপজেলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইতোমধ্যে গাংনী মডেল মসজিদ নির্মাণ হওয়ার পর অন্য ইমাম নিয়োগ না দিয়ে ইলিয়াস হোসেন মডেল মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত ১৫ আগস্ট বরখাস্তকৃত ইমাম মাওলানা ইলিয়াছ হোসেন ফজরের নামাজ শেষে আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন। এ ঘটনায় গাংনী উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুনতাজ আলী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশ দেন। পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।

মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ১৫ আগস্ট ফজরের নামাজ শেষ করে মসজিদে বসে সকল মৃত মানুষের জন্য দোয়া করা হয়। সেই সঙ্গে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নামেও দোয়া করা হয়। কয়েকদিন পর গাংনী উপজেলা নির্বহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু আমাকে অফিসে ডেকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে সব খুলে বলি। তখন তিনি আমার ওপর রাগান্বিতহন। এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। আমাকে কোনো প্রকার নোটিশ বা আইনী প্রক্রিয়া ছাড়াই গত ২৪ সেপ্টেম্বর মৌখিকভাবে ইমামতি করতে নিষেধ করা হয়েছে। পরে ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু স্বাক্ষরিত একটি অব্যাহতি পত্র হাতে পেয়েছি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক সিরাজুম মনির বলেন, গাংনী মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা ইলিয়াছ হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা বির্তকিত মোনাজাতের জন্য গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে তার সত্যতা মেলে। পরে সেখান থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দিলে ইলিয়াছ হোসেনকে ইমামতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, মাওলানা ইলিয়াছ হোসেন মডেল মসজিদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত নন। মডেল মসজিদ হওয়ার আগে সেখানে থাকা মসজিদের ইমাম তিনি। মডেল মসজিদের জন্য সামনের মাসে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু বলেন, ওই ইমামের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। সেই অভিযোগ তদন্ত প্রমাণিত হওয়ায় ইমামকে ইমামতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মসজিদের মোয়াজ্জিনকে ইমামের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক