পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বহুল কাঙ্ক্ষিত জ্বালানি ইউরেনিয়াম আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পাবনার রূপপুরে আনা হয়েছে। সুদূর রাশিয়া থেকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় এই জ্বালানি এসেছে বাংলাদেশ। এ জন্য দুই দেশের কর্তৃপক্ষকে অনেকগুলো ধাপে কাজ করতে হয়েছে। কীভাবে এই ইউরেনিয়াম রূপপুরে এলো সে বিষয়ে নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বিস্তারিত জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি, বাংলাদেশ (এনপিসিবিএল)-এর এমডি ড. মো. শৌকত আকবর।
শৌকত আকবর জানান, আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুসরণ করেই আমরা ফুয়েল ম্যানিউফ্যাকচারিং সম্পন্ন করি। আমাদের লাইসেন্স প্রাপ্তি, প্রকল্প এলাকার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন, প্রকল্প এলাকায় ফুয়েল রাখার ব্যবস্থা, যন্ত্রপাতি রাখা, জনবল প্রশিক্ষিত করাসহ অনেকগুলো ধাপ সম্পন্ন করার পর গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে এসেছে ইউরেনিয়াম।
তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য যে জ্বালানি আনা হয়েছে, তা দেশের ও আন্তর্জাতিক আইনের যে বাধ্যবাধকতা-সেগুলো সম্পন্ন করেই আনা হয়েছে। এই ফুয়েল ম্যানিউফ্যাকচারিংয়ের সময় আমি নিজে সাইবেরিয়ায় গিয়ে স্বাক্ষর করেছি এবং ইউরেনিয়ামগুলো প্রস্তুত হয়েছে।
শৌকত আকবর বলেন, এরপর জ্বালানি দেশে আনার জন্য যে ধরনের টেকনিক্যাল ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার থাকা দরকার, সেগুলো আমরা নিশ্চিত করেছি। যে স্থাপনায় ইউরেনিয়াম রাখা হবে, সেগুলো ঠিক করা এবং আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করেছি। সার্বিক নিরাপত্তায় যে সেফটি ও সিকিউরিটি সিস্টেম সেটিও তৈরি করেছি। পরে সেটি যথার্থ হয়েছে কি না তা আইএইএ’র মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছি। আইএইএ কর্তৃপক্ষ এক্সটেনসিভ সুপারভিশন করেছে। তারা আমাদের সব কাজ যথাযথ হয়েছে মর্মে সম্মতি দিয়েছে। আমরা সর্বশেষ জ্বালানি আমদানির লাইসেন্সও নিয়েছি।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যখন পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে, তখনই আমরা জ্বালানি আনতে সক্ষম হয়েছি।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রোসাটম তাদের শর্ত অনুযায়ী জ্বালানি গতকাল বৃহস্পতিবার সরবরাহ করেছে। গতকাল প্রথম চালানটি ঢাকায় আসে। আমরা এটা গ্রহণ করি। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তায় আজ শুক্রবার এই জ্বালানি রূপপুরে আসে। বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সবার প্রচেষ্টায় রাশিয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রোসাটম সফলভাবে প্রথম চালানটি আমাদের সরবরাহ করেছে।
রূপপুরের দুটি ইউনিটের মধ্য একটির নির্মাণ কাজ পুরোটাই শেষ করেছে পরমাণু শক্তি কমিশন ও রুশ ঠিকাদার এটমসট্রয় এক্সপোর্ট। অন্যটির কাজও শেষ পর্যায়ে। যে জ্বালানি এসেছে তা প্রথম ইউনিটে লোড করা হবে এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে। তখন থেকেই পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করবে রূপপুর। পরমাণু শক্তি কমিশনের সূত্রগুলো বলছে, সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের মাঝামাঝিতে পুরোদমে একটি ইউনিটের ১ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে।
news24bd.tv/আইএএম