মানসিক স্বাস্থ্য চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের স্বাবলম্বী ও পুনর্বাসনে সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজ্ড-সিআরপির অবদান সত্যিই অকল্পনীয় ও প্রশংসার উপযুক্ত। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৩ উদযাপনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মিরপুরে একটি গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা এ মন্তব্য করেন।
মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০২৩ এর এবারের প্রতিপাদ্য, ‘মানসিক স্বাস্থ্য একটি সার্বজনীন মানবাধিকার’। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন সিআরপির অকুপেশনাল থেরাপির বিভাগীয় প্রধান মো. তৌহিদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ব্রিগেডিয়ার জেনেরাল (অবসরপ্রাপ্ত) আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশের সকল সাকিয়াট্রিস্ট আমাদের দেশের সব মানসিক স্বাস্থ্য চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তির জন্য খুব সুন্দরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সিআরপি যেভাবে মানসিক স্বাস্থ্য চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিকে স্বাবলম্বী ও পুনর্বাসন করছে সেটা সত্যিই অকল্পনীয় ও প্রশংসার উপযুক্ত।
ঢাকা সিএমএইচ এর শিশু নিউরোলজি বিভাগের কর্নেল ডা. মুর্শেদা মোশারফ বলেন, অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে এই প্রোগ্রামে আমন্ত্রণ করার জন্য, আমি জানতাম সিআরপি শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে। তবে আজ জানতে পারলাম যে সিআরপি মানসিক রোগীদের এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়েও এখন কাজ করে। সিআরপি যে মেন্টাল হেলথ ডে সেন্টারের মাধ্যমে সত্যিই অতুলনীয় এবং মুগ্ধকর কাজ হচ্ছে এই ব্যক্তিদের নিয়ে। আমি আরও একটি বিষয় নিয়ে আনন্দিত যে, পেশেন্ট এবং তাদের পরিবার এর সদস্যাদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে এবং আমি সঙ্গে সঙ্গে এটা বলতে চাই যে, এই সেন্টারে যদি এই বাচ্চা পেসেন্ট আসছে তাদের জন্য যদি একাডেমির সেশন রাখা যায় উপকার হবে বলে মনে করি।
চাইল্ড অ্যান্ড ডিজিবিলিটি অ্যাফেয়ার্স এর স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট সৈয়দা মুনিরা ইসলাম বলেন, আমি অনেক কৃতজ্ঞ এবং আমি আগে থেকেই সিআরপির প্রতি কৃতজ্ঞ । আপনারা জানেন যে আমার নিজের মেয়ে সেও একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি। আমার মেয়ের যখন থেকে তার রোগ নির্নয় হয়, তখন থেকে আমি খুঁজতে শুরু করি কোথায় আমি আমার মেয়ের সেবা পাবো। খুঁজতে খুঁজতে আমি সিআরপি তে আসি তার থেরাপি সেবা গ্রহণ করি। আলহামদুলিল্লাহ সে এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছে।
ঢাকা সিএমএইচ এর শিশু নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল ডা. নাজমুল হামিদ বলেন, মানসিক রোগীদের স্বাস্থ্য সেবায় আমাদের সবার প্রথমে সমাজের কুসংস্কার দূর করতে হবে এবং সমাজকে সচেতন করতে হবে। আমি মনে করি আমাদের দেশে শুধু মানসিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার জন্য একটি দেশীয় হট লাইন নম্বর থাকা প্রয়োজন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিক সাইকোসোশাল ওয়ার্কার মো. জামাল হোসেন বলেন, সিআরপি যেভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে সেটি একটি বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য মডেল। আমরা বইপত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে যেসব কিছু দেখতে পাই সেই চিকিৎসা সেবার বাস্তবায়ন করছে সিআরপি।
অস্ট্রেলিয়ার এম এস ডব্লিউ হেলথ এর সোশ্যাল ওয়ার্কার কেইট জোনাস এবং ডেনিস স্টিভেন্স বলেন, অস্ট্রেলিয়াতে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করা হয়। সেখানে সকল প্রফেশনালরা একত্রিত হয়ে রোগীর চিকিৎসা করেন মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর জন্য সরকারিভাবে সকল ব্যয় বহন করা হয়।
ইবনে সিনা হাসপাতালের সাইকোথেরাপিস্ট সানজিদা ইসলাম বলেন, সিআরপির এই সেবাটি অনেক চমৎকার একটি সেবা। আমি মনে করি, রোগী ও রোগীর কেয়ার গিভার কে নিয়ে যে সেবা প্রদান করছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সাইকিয়াট্রিক ডা. মো. জুবায়ের মিয়া বলেন, সিআরপি মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় যখন থেকে কাজ করছে সেই সূচনা লগ্ন থেকে আমি সিআরপি সঙ্গে কাজ করছি। এটি বাংলাদেশে প্রথম মানসিক চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশে মেন্টাল হেলথ ডে সেন্টার বহুল আলোচিত কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যা মানুষদের জন্য মেন্টাল হেলথ সেন্টার সেবাটি প্রথম সিআরপি চালু করে। আমি মনে করি মানসিক স্বাস্থ্য সেবার সকল প্রফেশনালরা একসাথে কাজ করলে এই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল স্রোত ধারায় নিয়ে আসা সম্ভব।
news24bd.tv/আইএএম