ঢাকামুখী ছুটছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা! 

প্রতীকী ছবি

৩০ অক্টোবর সচিবালয় ঘেরাও

ঢাকামুখী ছুটছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা! 

আরেফিন শাকিল

রাজনীতির মাঠে ফের উত্তেজনা তৈরি করেছে ২৮ অক্টোবরের বিএনপির মহা-সমাবেশ। সেই উত্তাপে ঘি ঢেলেছে একইদিনে মতিঝিলে স্বাধীনতা বিরোধীদের সংগঠন জামায়াত মহা-সমাবেশ ডাকায়।

এরই মধ্যে গুলিস্তানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরাও। একইদিনে তিনটি দলের ঢাকায় সমাবেশ থাকায় নিরাপত্তা শঙ্কায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

শেষ পর্যন্ত জামায়াত সমাবেশের অনুমতি না পেলেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মহা-সমাবেশের অনুমতি পেতে পারে বলে জানিয়েছে ডিএমপির একটি সূত্র।  

শনিবারের মহা-সমাবেশে যোগ দিতে সারাদেশে বার্তা পাঠিয়েছে বিএনপি। সংসদীয় আসন কেন্দ্রীক প্রার্থী ও জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে ঢাকায় আগেভাগে চলে আসার নির্দেশ দিয়েছে বিএনপির হাইকমাণ্ড। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঢাকায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা, আশ্রয় নিচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায়।

 

বিএনপির একজন নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের নেতা নিউজ টোয়েন্টিফোরকে জানান, 'আমার এলাকা থেকে গেল দুইদিনে দেড় হাজার নেতা-কর্মী ঢাকায় এসেছেন। বাকিরা বুধবারের মধ্যে ঢাকায় ঢুকবে। সবাইকে নিজেদের ব্যবস্হাপনায় ঢাকায় থাকার অনুরোধ করেছি। সবাই বাস্তবতার আলোকে তা মেনেও নিয়েছে'। নেত্রকোণা- ৩(কেন্দুয়া-আটপাড়া) থেকে বিএনপির সম্ভ্যাব প্রার্থী বিএনপির পেশাজীবি সংগঠন এ্যাবের সহ-সভাপতি ইন্জি: মো. মোস্তাফা ই জামান সেলিম নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, "যতই বাধা বিপত্তি আসুক যেকোন মূল্যে আমার কেন্দুয়া-আটপাড়া থেকে দুই হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মহাসমাবেশে যোগ দেবে। অনেকেই এরইমধ্যে ঢাকায় এসেছেনও। এই লড়াইয়ে আমরা অবশ্যই জিতব কারণ জনগন সাড়া দিচ্ছে"। একইভাবে রাজশাহী, খুলনা অঞ্চল থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসছেন বলে জানিয়েছেন।  

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, "মহা-সমাবেশে সরকারী বাহিনী বা দলের পক্ষ থেকে নূন্যতম উসকানি দেয়া হলে পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেয়া আছে"। বিএনপি নেতারা জানান, মহা-সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করে ৩০ অক্টোবর থেকে লাগাতার কঠোর কর্মসূচীতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এনিয়ে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দফায় দফায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিটিং হয়েছে। সোমবার গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সাথেও এনিয়ে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।  

সূত্র বলছে, শনিবারের মহাসমাবেশ থেকে সংবিধান সংশোধনের দাবিতে আইন মন্ত্রণালয় অভিমুখে ৩০ অক্টোবর ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এরপর ঢাকায় দুই মহানগর থেকে একযোগে পদযাত্রা, ইসি ঘেরাও ও সবশেষ অবস্থান কর্মসূচি দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের সাইফুল হক জানান, ঘেরাও, অবস্হান কর্মসূচির দিকে তাদের মনোযোগ বেশি।  

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে আমরা সমাবেশটা করতে চাই। আশাকরি সরকার পদত্যাগ করে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেবে। বিএনপি নেতারা জানান, তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত আর ঢিলেঢালা কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি। আন্দোলনের শেষ ধরে নিয়েই এবার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চান তারা। আর ব্যাকফুটে খেলতে চান না। কারণ এরইমধ্যে নাশকতার মামলায় অনেক নেতা-কর্মীর সাজা হয়েছে, বাকিদের মামলাও শেষের দিকে। আর তাতে আতঙ্ক বাড়ছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে। তাদের বিশ্বাস লাগাতার কয়েকদিন কঠোর আন্দোলন করা সম্ভব হলে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে আসবে।

news24bd.tv/কেআই