ঝিনাইদহে গৃহবধূ হত্যায় গ্রেপ্তার ৩

ঝিনাইদহে গৃহবধূ হত্যায় গ্রেপ্তার ৩

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

পরকীয়ার জের ধরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে গৃহবধূ জামেলা খাতুন ওরফে ওজোলাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের সাথে তার স্বামী শরিফুল ইসলাম, ছেলে সাইদুল ইসলাম মান্নান ও পাশের গ্রাম বাড়ি বাথান গ্রামের জাকির হোসেন জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে।  

মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝিনাইদহ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেন।

 

জিজ্ঞাসাবাদে জামেলা খাতুনের ছেলে মান্নান পুলিশকে জানায় প্রতিবেশী চাচা রাজাপুর গ্রামের মৃত রস্তম বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল করিমের সঙ্গে তার মায়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন শনিবার সকালে নিজেদের গোসলখানায় আব্দুল করিম তার মায়ের আপত্তিকর দৃশ্য দেখে তার বাবা শরিফুল ইসলাম ও প্রথম প্রেমিক জাকির হোসেনকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে।  

পরে তারা একত্রিত হয়ে প্রথমে মা জামেলা খাতুনকে হত্যা করে। পরে আব্দুল করিমকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।

আব্দুল করিম গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শ্বাসনালী কেটে গেছে।  

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নিহত জামেলার স্বামী বাড়ি বাথান গ্রামের ইউসুফ মন্ডলের ছেলে দিনমজুরির কাজ করে। জাকির হোসেনও বিভিন্ন সময় ওজোলার সাথে পরকীয় সম্পর্ক চলতে থাকে। কিন্তু প্রতিবেশী আব্দুল করিম বিভিন্ন সময়ে বাঁধার কারণ হয়ে দাড়ায়। ফলে স্বামী শরিফুল ও তার ছেলে মান্নানের সঙ্গে পরামর্শ করে করিমকে শায়েস্তা করার ছক কষে। ঘটনার দিন সকালে সেই সুযোগ পেয়ে যায়। জামেলার গোসলখানায় দুইজনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে।  

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল করিম জানিয়েছেন নিহত জামেলার স্বামী শরিফুল ইসলাম ও প্রতিবেশী জাকির হোসেন জামালকে হত্যা করে তাকেও হত্যার চেষ্টা করে। নিহতের স্বামী শরিফুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার আগে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন করিম তার স্ত্রীকে উত্যক্ত করতো। তাকে কু-প্রস্তাব দিত। রাজি না হওয়ায় তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। পরে করিম নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। প্রতিবেশী সুজনের স্ত্রী রূপা খাতুন জানান, এক সময় করিম জামলাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেখান থেকেই মূলত বিরোধের সূত্রপাত।  

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের কামাল আহমেদ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।  

এরপর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মামলাটির আসল রহস্য উদঘটনে আরো নিবিড় তদন্ত দরকার। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে নিহতের স্বামী, ছেলে ও জাকির হোসেন এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।

news24bd.tv/কেআই