শমসের গাজী। আঠারো শতকের মধ্যভাগের একজন বিপ্লবী নেতা ও প্রজাহিতৈশী শাসক। যিনি একটি সামান্য কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও বৃহত্তর কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ অঞ্চল শাসন করেন। তিনি এই অঞ্চলের জনসাধারণকে মগ, পর্তুগিজ ও হার্মাদদের লুটতরাজ এবং ত্রিপুরার অত্যাচারী রাজার হাত থেকে মুক্ত করেন। জনসাধারণ তাঁকে ভাটির বাঘ উপাধিতে ভূষিত করেন। বিপ্লবী শমসের গাজী ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৭০৫ খ্রি.) একটি বাঙালি মুসলিম কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল পীর (বা পেয়ার) মুহাম্মদ খান এবং মায়ের নাম ছিল ছিল কাইয়ারা বিবি। তারা ছিলেন ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার ঘোপাল ইউনিয়নের নিজকুঞ্জরা গ্রামের অধিবাসী। পীর মুহাম্মদ খান ওমরাবাদ পরগনার একটি কাছারিতে খাজনা আদায় করতেন। পরবর্তীতে তিনি চাকলা রওশনাবাদের জমিদার নাসির মুহাম্মদ চৌধুরীর আশ্রয় লাভ...
মুসলিম মনীষী, ভাটির বাঘ বিপ্লবী শমসের গাজী
মুফতি আতাউর রহমান

বেচাকেনায় উদার হলে বরকত হয়
মাইমুনা আক্তার

সৎ ব্যবসায়ীদের আরেকটি গুণ হলো, তারা ক্রেতাদের যতটুকু সম্ভব সহজ শর্ত দিয়ে ব্যবসা করে। ক্রেতাকে মানসম্মত পণ্য ক্রয় করতে সহযোগিতা করে। লেনদেন সহজ করে। যৌক্তিক কারণে কেউ পণ্য ফেরত দিতে চাইলে বিক্রিত মাল ফেরত নেয়। একে অপরকে ঠকানোর ব্যাপারে মহান আল্লাহকে ভয় করে। এতে তাদের ব্যবসার বরকত হয়, কারণ এ ধরনের ব্যবসায়ীর জন্য রাসুল (সা.) দোয়া করেছেন। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিক্রয়কালে উদারচিত্ত, ক্রয়কালেও উদারচিত্ত এবং পাওনা আদায়ের তাগাদায়ও উদারচিত্ত আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি দয়া করুন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২০৩) নবীজি (সা.)-এর এই নির্দেশনা মেনে চললে সমাজের চেহারাই পাল্টে যেত। কেউ কাউকে ঠকাতো না। কেউ পণ্যে ভেজাল মেশাতো না। কেউ সিন্ডিকেট করে গোটা সমাজের মানুষকে বিপদে ফেলতে পারত না। আমাদের কাছে মনে হতে পারে, যে বেচাকেনায় এরকম...
যে বৈশিষ্ট্যে অনন্য কওমি মাদ্রাসা
ইয়াকুব আলী

যতদিন কওমি মাদ্রাসায় পড়েছি ততদিন কমবেশি শিক্ষকের জুতা বহন করা, তাদের অজুর পানি এনে দেওয়া খুব কমন বিষয় ছিল। শিক্ষক জুতা হাতে হেঁটে যাচ্ছেন আর আমরা তাঁর কাছাকাছি থেকেও জুতা নিজের হাতে তুলে নেইনি এমন হতো না। ছাত্রের উপস্থিতিতে শিক্ষক নিজের জুতা বহন করবেন আর ছাত্র খালি হাতে হেঁটে চলে যাবে এটা ছাত্রের জন্য বেমানান, অপমানজনক মনে করা হয়। একটা কথা আছে, জ্ঞান অর্জন করতে হয় শিক্ষকের পায়ের কাছে বসে। ছাত্র বসে আর শিক্ষক দাঁড়িয়ে বই-পুস্তক পাঠ হলেও আদব-কায়দা শেখানো যায় না। মাদ্রাসায় ক্লাসে শিক্ষক ছোট্ট তোষকের ওপর কিছুটা আরাম করে বসতেন আর তাঁর তিনদিক ঘিরে ছাত্ররা বসে পড়ত। গরমে ফ্যান না থাকলে পর্যায়ক্রমে ছাত্ররা শিক্ষককে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করত। এক বছর আমি একজন শিক্ষকের খেদমত করেছিলাম। তাঁর কাপড় ধুয়ে পরিষ্কার করা, জুতা-সাইকেল মুছে দেওয়া, বোর্ডিং থেকে খাবার তুলে...
লোক দেখানো ইবাদতের কয়েকটি ধরন
শাকের উল্লাহ সাদেক

ইবাদত একান্তই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য খাঁটি অন্তর থেকে উত্সারিত এক নিবেদন। কিন্তু যখন এই পবিত্র আমলে মিশে যায় লোক দেখানোর প্রলোভন, তখন তা হয়ে ওঠে রিয়াএকটি সূক্ষ্ম অথচ ভয়াবহ আত্মপ্রবঞ্চনা। রিয়া আমলের প্রাণ হরণ করে, বান্দাকে বান্দার প্রশংসার কাঙাল বানিয়ে তোলে, অথচ সে ভাবে সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে রত। এই প্রবন্ধে রিয়ার কিছু সূক্ষ্ম রূপ ও তার বহুমাত্রিক প্রকাশ তুলে ধরা হয়েছেযা অনেক সময় অজান্তেই আমাদের আচরণে ঢুকে পড়ে। উদ্দেশ্য একটাইআত্ম-সমালোচনার দরজা খুলে দেওয়া, যাতে আমাদের ইবাদত হয় খাঁটি, নির্ভেজাল ও শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। রিয়া হলোলোক দেখানো, লৌকিকতা, প্রদর্শন করা বা প্রদর্শনেচ্ছা। ইংরেজিতেশো অফ। মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা বা বাহবা পাওয়া ও সুনাম কুড়ানোর লক্ষ্যে ইবাদত প্রকাশ করা। ইসলামি পরিভাষায় রিয়া হলোকোনো নেক কাজ বা কথা বলার ইচ্ছা...
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত