আবুল হোসেনের জন্য কালকিনি-ডাসারের ঘরে ঘরে শোক 

সংগৃহীত ছবি

আবুল হোসেনের জন্য কালকিনি-ডাসারের ঘরে ঘরে শোক 

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

সৈয়দ আবুল হোসেন ছিলেন কালকিনি-ডাসারের উন্নয়নের রূপকার। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘরে ঘরে শোক করছে মানুষ।  

সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের জন্ম মাদারীপুরের ডাসারে।

ডাসার ছিল এক সময় প্রত্যন্ত গ্রাম। যেখানে ছিল না সড়ক যোগযোগ, ছিল না বিদ্যুতের ব্যবস্থা। সেই ডাসারকে সৈয়দ আবুল হোসেন রূপ দিয়েছিলেন আধুনিক শহরে। শুধু ডাসার নয় বৃহত্তর কলকিনিতে তার চেষ্টাতেই উন্নয়নের ছোয়া লেগেছিল।
নিজের অর্থায়নে তিনি তাঁর পৈত্রিক বাড়ির পাশেই গড়ে তুলেছেন দুটি কলেজ, দৃষ্টিনন্দন মসজিদসহ বহু স্থাপনা। প্রত্যন্ত ইউনিয়ন ডাসার তার প্রচেষ্টায় থানায় উন্নিত হয় এরপর উপজেলায় উন্নতি করেন তিনি।  

আবুল হোসেন ছিলেন মাদারীপুর-৩ আসনের একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। মন্ত্রীও ছিলেন একাধিকবার। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সৈয়দ আবুল হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।  

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, সৈয়দ আবুল হোসেন সুখে-দুঃখে সব সময় মানুষের পাশে থেকেছেন। তার মৃত্যুতে ঘরে ঘরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই বর্ষীয়ান নেতার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।  

স্থানীয়রা আরও জানান, তার নির্বাচনী এলাকায় কলেজ নির্মাণ করেছেন ৬টি। এছাড়া স্কুল নির্মাণ করেছেন কমপক্ষে ২০টি। সৈয়দ আবুল হোসেন সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে কালকিনিতে একের পর এক নির্মাণ করেছেন বিভিন্ন স্থাপনা। গড়ে তুলেছেন স্কুল-কলেজ, ক্লাব, কর্মমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  

এক সময় অনুন্নত এবং পিছিয়ে ছিল বৃহত্তর কালকিনি। পাশের অনেক অঞ্চলের চেয়ে শিক্ষা দীক্ষা, যোগাযোগ, অবকাঠামো ও আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডে অনেক পিছিয়ে পড়েছিল। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উন্নায়নের ছোয়া লাগে বৃহত্তর কালকিনিতে। বর্তমানে মাদারীপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার হার কালকিনিতে। অথচ ২০ বছর আগেও কালকিনি ছিল একটি পশ্চাদপদ গ্রাম।  

আবুল হোসেন শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামে প্রতর্তিত ‘বিদ্যাসাগর পদক’। ডাসার প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল, কলেজ, মসজিদের নামে বিপুল পরিমান জমি দান করে গেছেন আবুল হোসেন। তিনি মানুষের জন্য যা করেছেন, তার জন্য বহুদিন মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। ’

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘সৈয়দ আবুল হোসেনের চেষ্টায় বৃহত্তর কালকিনিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এক সময় কালকিনি-ডাসার ছিল অবহেলিত এলাকা। তিনি এমপি হওয়ার পর উন্নয়নের ছোয়া লাগতে শুরু করে। তিনি ছিলেন এলাকার উন্নয়নের রূপকার। ’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি জীবিত থাকাকালেই ডাসারে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করেন। পাশেই নিজের কবর তৈরি করে রাখেন।

তার বড় ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ নুরুজ্জামান বাবু জানান, চাচা বেঁচে থাকতে নিজেই কবর বানিয়ে রেখেছিলেন। পাশে চাচির জন্য কবর করেছেন।

news24bd.tv/আইএএম