খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ৩ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

সংগৃহীত ছবি

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ৩ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

অনলাইন ডেস্ক

বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না মেলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিদেশ থেকে চিকিৎসক নিয়ে আসা হচ্ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে এসে পৌঁছেছেন ৩ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।  

আজ বুধবার (২৫ অক্টোবর) মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রাত ৭ টা ৪০ মিনিট ঢাকায় পৌছান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।

 

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চিকিৎসকরা হলেন- ডা. হামিদ আহমেদ আব্দুর রব, ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ও ডা. জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটন। তারা তিনজনই বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের চিকিৎসক। এদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রফেসর হামিদ রব জন হপকিন্স কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট প্রোগ্রামের পরিচালক এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের পরিচালক।

তিনি রেডিওলোজি অ্যান্ড রেডিওলোজিকাল বিশেষজ্ঞ। এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলট একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলোজি বিভাগের পরিচালক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, এর আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দুইবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসায় টিপস জরুরি। কিন্তু দেশে এটি করার মতো বিশেষজ্ঞ এবং যন্ত্রপাতি নেই।

গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন বিএনপি নেত্রী। গত আড়াই মাসে কয়েক দফা তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

৭৮ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হদরোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে এখন লিভার সিরোসিসের অনেক জটিলতা আছে জানিয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, পেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বারবার বুকে পানি চলে আসছে।

হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা স্থগিত হওয়ার পর ২০২২ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য বাসায় ফেরেন। এরপর সাময়িক এই মুক্তির মেয়াদ আরও আট বার বাড়ানো হয়েছে।

সেই মুক্তির দুটি শর্তের মধ্যে একটি ছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তবে ২০২১ সালের শেষে পরিবারের পক্ষ থেকে তার ‘জীবন সংকটে’ জানিয়ে বিদেশে নেওয়ার জন্য সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়। সে সময় বিএনপি একই দাবিতে রাজপথে টানা কর্মসূচি পালন করে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে তখনও বলা হয়, দেশে চিকিৎসার সব সুযোগ শেষ হয়ে গেছে। বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্তে দেরি হলে যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষ থেকে সে সময় বক্তব্য আসে তাদের নেত্রী ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’।

সে সময় প্রায় তিন মাস হাসপাতালে থেকে খালেদা জিয়া বাসায় ফেরেন। এবার তিনি আবার হাসপাতালে আড়াই মাস ধরে।

গত ৯ অগাস্ট হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সরকারের কাছে আবার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়। এবারও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আইনের যে বিধান ব্যবহার করে তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে, সেটি দুইবার ব্যবহারের সুযোগ নেই।

বিদেশে যেতে চাইলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে আদালতে আবেদন করতে হবে অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

news24bd.tv/A