যেভাবে অল্পে তুষ্ট হয় অন্তর 

প্রতীকী ছবি

যেভাবে অল্পে তুষ্ট হয় অন্তর 

 আহমাদ ইজাজ

ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, অল্পে তুষ্টি ও জুহদ (দুনিয়াবিমুখতা) একই সূত্রে গাঁথা। জুহদ ও অল্পে তুষ্ট ব্যক্তির কতিপয় আলামত আছে। যেমন :

(১) সে তার অর্জিত সম্পদ নিয়ে অতি উৎফুল্ল হবে না। আবার যা পায়নি, তার জন্য দুশ্চিন্তাও করবে না

(২) তার সহায়-সম্পদ কখনো তাকে আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফিল করবে না, বরং পার্থিব কাজে জড়িয়ে পড়লেও তার হৃদয় সর্বদা আল্লাহর ভালোবাসায় ভরপুর থাকবে।

(৩) তার পার্থিব আশা-আকাঙ্ক্ষা খুব কম হবে। দুনিয়ার দীর্ঘ আশা নিয়ে সে কখনো বুঁদ হয়ে থাকবে না।

(৪) তার সম্পদ কম হলেও আল্লাহর পথে দান-সদকা করতে সে কখনো কৃপণতা করবে না এবং অল্প সম্পদের দোহাই দিয়ে সদকা করা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখবে না। (কুরতুবি, কামাউল হিরছি বিজ জুহদি ওয়াল কানাআত, ৩/১৮)

ইমাম মাওয়ার্দি (রহ.)-এর মতে, অল্পে তুষ্টির কিছু স্তর আছে।

কেউ উঁচু পর্যায়ের অল্পে তুষ্ট, আবার কেউ তার চেয়ে নিচু পর্যায়ের অল্পে তুষ্ট। তিনি বলেন, অল্পে তুষ্টির তিনটি স্তর আছে—

(১) দুনিয়ার সামান্য সম্পদে পরিতুষ্ট থেকে বাকি সব পার্থিব সম্ভার থেকে অন্তরকে নির্মোহ রাখা এবং সম্পদের আধিক্য অপছন্দ করা। এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের অল্পে তুষ্টি।

(২) যতটুকু সম্পদ প্রয়োজন শুধু ততটুকুতেই ক্ষান্ত থাকা এবং এর অতিরিক্ত সম্পদ ও আধিক্যের লোভ দমন করে রাখা। এটা মধ্যম পর্যায়ের অল্পে তুষ্টি।
(৩) জীবনধারণের জন্য সম্পদ সামান্য হলেও সে ব্যাপারে অভিযোগ না করা। কিন্তু প্রয়োজনের চেয়েও যদি বেশি সম্পদ হস্তগত হয়, তাহলে সেটাকে খারাপ মনে না করা। এটা সর্বনিম্ন পর্যায়ের অল্পে তুষ্টি। কেননা এই পর্যায়ে ভয় (রাহবাহ) ও আগ্রহ (রুগবাহ) উভয়ের সংমিশ্রণ ঘটে। (মাওয়ার্দি, আদাবুদ দুনইয়া ওয়াদ্দিন, পৃষ্ঠা ১২৬-১২৭)

 

এই রকম আরও টপিক