নাটোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

নাটোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোরে যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী মো. শরিফুল ইসলামকে (২৬) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় দিয়েছেন।  

দণ্ডপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কেচুয়াকোড়া গ্রামের মো. সামছুল হকের ছেলে।

আদালতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর নাটোর সদর উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে হাসনা হেনার সাথে শরিফুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শরিফুল যৌতুকের জন্য তার স্ত্রী হাসনা হেনার ওপর নির্যাতন শুরু করে।  

একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে যৌতুকের কোন দাবি বা এ নিয়ে হাসনা হেনাকে কোন নির্যাতন করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি তাদের দুজনার মধ্যে আবারও রেজিস্ট্রি কাবিনমুলে বিয়ে হয়।

 

এই বিয়ের পর আবারও যৌতুকের জন্য হাসনা হেনার ওপর নতুন করে নির্যাতন শুরু হলে মেয়ের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে শরিফুলকে যৌতুক বাবদ এক লাখ টাকা দেন। কিন্তু এরপরও নির্যাতন থামে না। আরো ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করা হয়।

এজন্য শরিফুল ইসলাম তার মা সাহারা বেগম, দুলাভাই জহুরুল ইসলাম ও  তার বোন সামিরুন আক্তার সুমার হুকুমে  স্ত্রীর ওপর  নির্যাতন চালাতে থাকে। ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে নির্যাতনের এক পর্যায়ে হাসনা হেনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে মেঝেতে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।  

পরে লোকমুখে খবর পেয়ে সকালে হাসনার মা মর্জিনা বেগম সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে মেয়েকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে।  

এ ব্যাপারে মর্জিনা বেগম বাদি হয়ে শরিফুল ইসলাম, তার মা  সাহারা বেগম, দুলাভাই জহুরুল ইসলাম ও  তার বোন সামিরুন আক্তার সুমাকে অভিযুক্ত করে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। স্বাক্ষী গ্রহণ শেষে বিচারক সোমবার দুপুরে দেয়া রায়ে আসামি শরিফুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।  অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।