শিশুর দুধ দাঁত মোটেও গুরুত্বহীন নয়

দুধ দাঁত মোটেও গুরুত্বহীন নয়

শিশুর দুধ দাঁত মোটেও গুরুত্বহীন নয়

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

বাচ্চাদের দুধ দাঁতকে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু মনে করেন না। তাই এর যত্নও নেন না। এ কারণে অনেক শিশুর দুধ দাঁতে ক্ষয় দেখা যায়, যাকে অনেকেই দাঁতে পোকা লাগা বলে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাঁতের গুরুত্ব অপরিসীম।

সব বয়সের জন্যই দাঁত অতি জরুরি। শিশুর দুধ দাঁত মোটেও গুরুত্বহীন নয়। খাবার চিবানো ছাড়া শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশেও এই দাঁতের ভূমিকা রয়েছে।

জীবদ্দশায় প্রত্যেক মানুষের দুই পাটি দাঁত থাকে।

প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় আমাদের যে দাঁত তা সাধারণত ছয় বছর বয়সের পর ওঠে। ছয় মাস বয়সের পর শিশুর প্রথম দাঁত বা দুধ দাঁত ওঠে। দাঁত ওঠার ওই সময়ে মাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা হতে থাকে। বাচ্চা কান্নাকাটি করে। বাবা-মা সাধারণত বুঝতে পারেন না কেন তার সন্তান কান্নাকাটি করছে। সমস্যা বেশি দেখলে প্রয়োজনে দন্ত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়।

ব্রিটিশ ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের শার্লোট ওয়েইট বলেন, শিশুদের দুধ দাঁত খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমেই সে খাওয়া শুরু করে। পুষ্টিকর শক্ত খাবার খায় এই দুধ দাঁত দিয়ে। এই খাবার শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে শিশু আমাদের সঙ্গে কান্না ছাড়া ভিন্নভাবে যোগাযোগ শুরু করে এই বয়সে।

যতক্ষণ পর্যন্ত মাড়ি যথেষ্ট বড় না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত দুধ দাঁত জায়গা ভরিয়ে রাখে। যতক্ষণ পর্যন্ত ৩২টি দাঁত পূর্ণ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত দুধ দাঁত কাজ চালিয়ে যায়। কোন দাঁতই গুরুত্বহীন নয়। প্রতিটা দাঁতের আলাদা কাজ আছে এবং প্রতিটা দাঁত অত্যাবশ্যকীয়। অনেকে মনে করেন দুধ দাঁত গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ তা তো আবার উঠবেই। ভুল। দাঁত ক্ষয় বা তুলে ফেলা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশের ওপর।  

অনেক সময় এই দুধ দাঁত ছোট আকারের হয় না, বরং প্রাপ্তবয়স্ক দাঁতের মতোই এগুলোর শেকড় বড় হয়ে থাকে যাতে তার নিচে দাঁতগুলো যথেষ্ট বড় হতে পারে। সময়মতো দুধ দাঁতের শেকড় উধাও হয়ে যায় এবং তার জায়গা নেয় অন্যকিছু। দুধ দাঁত এক সময় নড়া শুরু করে এবং তার নিচে প্রাপ্তবয়স্ক দাঁত উঠতে শুরু করে।

মানুষ একমাত্র প্রাণি যার দীর্ঘ সময় দুধ দাঁত থাকে। বেশিরভাগ স্তন্যপায়ী প্রাণির জীবদ্দশায় দুই সেট দাঁত থাকে। কুকুর-বিড়ালের জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুধ দাঁত ওঠে। প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে তা পড়েও যায়। মাছ ও সরীসৃপের মতো মেরুদণ্ডী প্রাণিরও দাঁত থাকে। হাতির মতো অন্য প্রাণিদের ছয়টি কশের দাঁত থাকে। খাবার হিসেবে তারা যে কোন গাছ খায় এবং তা চিবানোর মাশুলও দিতে হয়।

শার্লোট ওয়েইট দাবি করেন, দাঁতে মানুষের স্টেম সেল থাকে। যদিও বিজ্ঞান এখনো প্রমাণ করতে পারেনি, তবে ভবিষ্যতে স্টেম সেল ব্যবহার করে মানুষের শরীরের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পুনর্নিমান সম্ভব হবে।  

তিনি বলেন, ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দিয়ে শিশুর দাঁত দিনে দুইবার ব্রাশ করে দেওয়া জরুরি। চিনি কম খাওয়া ও নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি। সূত্র: বিবিসি

সম্পর্কিত খবর