শিশুকে বন্ধক রেখে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ: অবশেষে মায়ের কোলে নবজাতক

সংগৃহীত ছবি

শিশুকে বন্ধক রেখে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ: অবশেষে মায়ের কোলে নবজাতক

অনলাইন ডেস্ক

গাজীপুরের শ্রীপুরে ক্লিনিকের সিজারিয়ান বিল পরিশোধ করার জন্য শিশুকে একটি পরিবারের কাছে বন্ধক রাখেন মা। পরে ১৫ দিন পর ওই পরিবারকে ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশা সহায়তায় টাকা পরিশোধ করলে শিশুটি মায়ের কোলে ফিরে আসে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার ফরিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।

 

শিশু সন্তানকে কোলে পেয়ে মায়ের বাঁধ ভাঙা আনন্দে সবার মুখে শান্তি দেখা যায়। বাবা ছাড়া শিশুটির সংসার চালানোর জন্য শিশুর নানাকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উপহার দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।

জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবার ময়মনসিংহের চরপাড়া এলাকার স্বাধীন নার্সিংহোমে সিজারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন গৃহিনী শিরিন আক্তার। পরে সিজারের বিল পরিশোধ না করতে পেরে একটি পরিবারকে শিশুকে বন্ধক দিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করেন।

পরে বন্ধকের টাকা ফেরত দিয়ে শিশুকে ফিরিয়ে আনতে চাইলে বন্ধক নেওয়া পরিবার শিশুকে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। পরে শিশুর পরিবার বিভিন্ন মানুষের কাছে সহায়তা চায় শিশুকে ফিরে পেতে। পরে ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশা এগিয়ে আসেন শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে।

আজ দুপুরে ফরিদপুর গ্রামে নবজাতক দেখতে যান দেখতে যান ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশা। তিনি তার পরিবারের সাথে কথা বলেন। শিশুর মা ও নানা-নানির সাথে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে তাদের আরও সহায়তার আশ্বাস দেন এ ব্যবসায়ী।

শিশুটির মা শিরিন আক্তার জানান ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের মনিকুরা গ্রামে তার স্বামীর বাড়ি। স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হলে সে মা-বাবার সাথে শ্রীপুরের ফরিদপুর গ্রামে ভাড়া থাকেন। শিরিন আক্তারের দেড় বছর বয়সী আরও একজন পুত্র সন্তান আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। সন্তানকে ফিরে পেয়ে তিনি ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশা ও উপজেলা প্রশাসনের কছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য ইসমাইল হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশার সহযোগিতায় শিশুটি তার মায়ে কোলে ফিরেছেন এটা খুবই আনন্দের।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, একটি শিশু জন্মের পর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তার মায়ের কোলে থাকা তার অধিকার। তবে পরিবারটির অসহায়ত্বের জন্য এ শিশুকে দ্ত্তক দেয়। আমাদের সমন্বিত চেষ্টায় শিশুকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে আনন্দ লাগছে।

ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশা বলেন, নবজাতককে দত্তক দিয়ে ক্লিনেকে বিল পরিশোধ করতে হয় এটা খুবই দুঃখের। বিষয়টি আমাকে কাঁদিয়েছে, আমাকে স্তব্ধ করেছে। পরে আমি ও আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সহযোগিতায় শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

news24bd.tv/Aa