জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে অভূতপূর্ব সাফল্য এনেছে সরকার

সংগৃহীত ছবি

জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে অভূতপূর্ব সাফল্য এনেছে সরকার

অনলাইন ডেস্ক

গণমানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করা যেকোনো দেশের সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব। প্রতিটি ব্যক্তির মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে ও ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয়নি সে অগ্রযাত্রা।

‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর দেশ পিছিয়ে যেতে থাকে। সব মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত হওয়ার যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং তা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা অধরাই থেকে যায়। কিন্তু ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে থাকে। তবে এ যাত্রাও ব্যাহত হয় পরবর্তী বিএনপি সরকারের আমলে।
 

অবশেষে ২০০৯ সালে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সেই স্বপ্নযাত্রা বাধাহীনভাবে বাস্তবায়িত হতে থাকে। বর্তমানে মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে সরকার ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে।

অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থান- এই পাঁচটি মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতে বর্তমান সরকার ঈর্ষণীয় সফলতা দেখিয়েছে। কৃষি উৎপাদন ও গবেষণা, বস্ত্র উৎপাদন, আবাসন নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার বিস্তার, চিকিৎসার উন্নয়ন সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

খাদ্য
গত ১৫ বছরে খাদ্য উৎপাদনে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কৃষি গবেষণা-সম্প্রসারণ, কার্যকর সংযোগ স্থাপন, ন্যায্যমূল্যে কৃষি উপকরণ কৃষকের নিকট সহজলভ্য করা এবং কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে ফসলের নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। ফলে কৃষি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়। আধুনিক, লাভজনক ও যান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। উচ্চ ফলনশীল ও প্রতিকূলতা সহিষ্ণু নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন ও প্রবর্তনের ফলে খাদ্যশস্য, সবজি ও ফল উৎপাদনে বৈচিত্র্য এসেছে এবং ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে।

খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০০৮-২০০৯ সালে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ফসলের উৎপাদনেও ধারাবাহিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

বিগত ১৫ বছরে বৈরি পরিবেশ সহনশীল জাতসহ মোট ৬৯৯ টি উন্নত/উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল উদ্ভাবন ও ৭০৮ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে ধানের জাত ৮০ টি। কৃষকদের কৃষিযন্ত্রের ক্রয়মূল্যের উপর হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ ও অন্যান্য এলাকায় ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে।

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ

২০১০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কম্বাইন হারভেস্টর, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, রিপার, সিডার ও পাওয়ার থ্রেসারসহ প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজারটি  কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষি শ্রমিকের অপ্রতুলতা মোকাবিলা এবং উৎপাদন ব্যয় হ্রাস হয়েছে।

বিগত ১৫ বছরে ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে প্রায় ৯ গুণ, আলু ২ গুণ, ডাল ৪ গুণ, তেলবীজ ২.৫ গুণ ও সবজি ৮ গুণ। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের কৃষির সাফল্য বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। বাংলাদেশের ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়,  চা উৎপাদনে ৪র্থ  এবং আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম। ২০০৮-০৯ সালে চালের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ১৩ লাখ টন যা ২০২২-২৩ সালে ৪ কোটি টনেরও বেশিতে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে গমের উৎপাদন ছিল ৮ লাখ ৪৯ হাজার টন, ২০২২-২৩ সালে ১১ লাখ ৭০ হাজার টন, ভুট্টা ছিল ৭ লাখ টন যা এখন ৬৪ লাখ টন, আলু ৫ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টন,  সবজি ৩০ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ টন।

পঞ্চব্রীহি- এক ধান গাছে পাঁচবার ফলন দিবে। এমন এক নতুন জাতের ধান গাছ উদ্ভাবন করেছেন ধান গবেষক ও জিন বিজ্ঞানী কুলাউড়ার আবেদ চৌধুরী। একবার রোপণে এ ধানের গাছে বছরজুড়ে পাঁচবার ফলন আসায় সৃষ্টি হবে নতুন এক ইতিহাস। নতুন এ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ধান গবেষক ও জিন বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী। তিনি ইনকিলাবকে জানান, বোরো হিসেবে গত বছরের প্রথমে লাগানো এ ধান ১১০ দিন পর পেকেছে। একই গাছে পর্যায়ক্রমে ৪৫ থেকে ৫০ দিন পরপর একবার বোরো, দুই বার আউশ এবং দুই বার আমন ধান পেকেছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা এক জমি থেকে পাঁচবার ধান কেটেছেন।

আয়তনে ছোট এবং বেশ ঘনবসতিপূর্ণ হলেও বাংলাদেশ স্বাধীনতা–পরবর্তী ৫০ বছরে সীমিত সাধ্য নিয়েই অন্তত ১৩টি ক্ষেত্রে বিশ্বের দরবারে গৌরবোজ্জ্বল ও ঈর্ষণীয় অবস্থান তৈরি করেছে। এসব খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকিগুলো কষ্ট করে অর্জন করতে হয়েছে।

ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ ২২ দিন

ইলিশে প্রথম- সারা বিশ্বে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই বাংলাদেশে হচ্ছে, যা পরিমাণে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। তবে ইলিশ উৎপাদন ৭ লাখ টন হওয়াও সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। চার বছর আগেও বিশ্বে মোট ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬৫ শতাংশ।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৪৭ দশমিক ৫৯ লাখ টন, যা ২০০৭-০৮ অর্থবছরের মোট উৎপাদন ২৫ দশমিক ৬৩ লাখ টনের চেয়ে ৮৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি। মাথাপিছু দৈনিক মাছ গ্রহণের চাহিদা ৬০ গ্রাম থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৭.৮০ গ্রাম।

গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২২–২৩ অর্থবছরে দেশে চাহিদার তুলনায় ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেশি হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে গত ১০ অর্থবছরে ডিম ও দুধ উৎপাদন দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আর মাংস উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ১৭ কোটি, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৩৩৮ কোটি। এই ১০ অর্থবছরে দুধ উৎপাদন ৬১ লাখ টন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ টন। সব ধরনের মাংসের ক্ষেত্রে যা ৪৫ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৭ লাখ টন।

বস্ত্র
বস্ত্র উৎপাদনে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের বস্ত্র খাতে রপ্তানি আয় ২০১৯-২০,২০২০-২১ ও ২০২১-২২ (মে/২২ পর্যন্ত) অর্থবছরে যথাক্রমে ৮৩%, ৮৪.৪২%, ৮৪.৪৯% ছিলো।  

বস্ত্র আইন ২০১৮ এর ধারাবাহিকতায় বস্ত্র বিধিমালা -২০২১ জারী করা হয়েছে। বস্ত্র খাতে ১২৬৮১ জন শিক্ষার্থীকে কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। বিজেএমসি'র বন্ধ ঘোষিত দুটি মিল লীজ ভিত্তিতে চালুর লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং দুইটিতেই ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু হয়েছে ।  

বিটিএমসি’র ১৬টি বন্ধ মিল চালু করার নিমিত্ত ১ম পর্যায়ে ২টি মিলের চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত ২টি মিলের মধ্যে ১টি মিল হস্তান্তর করা হয়েছে। ২য় পর্যায়ে ৪টি মিল চালু করার লক্ষ্যে গত ১৮.০১.২০২২ তারিখে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহবান করা হয়েছে।  

রাজশাহী রেশম কারখানার ১৯টি লুম চালুর মাধ্যমে ২৮২১৩ মি. রেশম বস্ত্র উৎপাদন হয়েছে। ৪১ টি জেলার ৯৯ টি উপজেলায় আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের ৫২৮ টি সমিতির ২৩,৪১৬ জন সদস্যদের মধ্যে ২৬২৪ জন চাষিকে রেশম চাষে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জাতীয় রপ্তানিতে পাট ও পাটজাত পণ্য ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২য় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে।  

পাট আইন, ২০১৭ এর অধীন ৪০৮৮৯ টি লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন করা হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন,২০১০ বাস্তবায়ন হওয়ায় পাটপণ্যের অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রায় ৩৪ কোটি পাটের বস্তা ব্যবহৃত হয়েছে। জেডিপিসির সহায়তায় বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনকারী ৮১৪ জন উদ্যোক্তা কর্তৃক ২৮২ ধরনের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে ,যা পাটপণ্যমেলায় প্রদর্শন ও বিপণনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

আবার ফিরেছে মসলিন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালে ঘোষণা করেন—যে ভাবেই হোক মসলিন কাপড় ফিরিয়ে আনতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐ ঘোষণা অনুযায়ী প্রায় ১৭০ বছর পর ২০২০ সালে ঐতিহাসিক ঢাকাইয়া মসলিন শাড়ি তৈরি হয়। এক একটি শাড়ির উৎপাদন মূল্য প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা পড়ে। তবে গবেষকরা বলেছেন, শাড়ির উৎপাদন মূল্য আস্তে আস্তে কমিয়ে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর ঢাকাই মসলিনকে জিআইপি পণ্য ভৌগোলিক নির্দেশক স্বত্বের অনুমোদন দেওয়া হয়।

চিকিৎসা
দেশে স্বাস্থ্য খাতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দেশে বর্তমানে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর সংখ্যা ৪ টি। দেশে বর্তমানে ১১১টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে, যার মধ্যে সরকারি ৩৭টি। এখন নার্সিং ইন্সটিটিউট আছে ৩৫০টি যাতে ৩৪ হাজার নার্সিং আসন রয়েছে। দেশে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মিলে রয়েছে ১০ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান।

দেশে বর্তমানে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে ১৪ হাজার শয্যা রয়েছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও সারাদেশে অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৫২ হাজার ৫৬০টি। জনস্বাস্থ্য পরিষেবার সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের প্রধান আটটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১০ হাজার শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে ১১টি। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কিডনি ডিজিস অ্যান্ড ইউরোলজি, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অফথালমোলজি, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক্স রিহ্যাবিলিটেশন, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিস এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব  মেন্টাল হেলথ। এছাড়া রাজধানীর মহাখালীতে রয়েছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ডিজিস অব দ্য চেস্ট অ্যান্ড হসপিটাল ও ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হসপিটাল। তেজগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইএনটি এবং মাতুয়াইলে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব চাইল্ড অ্যান্ড মাদার। এছাড়া চট্টগ্রামে রয়েছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিস।
    
বিশেষায়িত চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’ তৈরি হয়েছে। ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতালটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিদিন প্রায় ৫-৮ হাজার রোগীকে হাসপাতালের আউটডোরে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯টি ফ্লোর ও ৩টি বেজমেন্ট আছে। থাকছে প্রযুক্তি ভিত্তিক মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হেলথ কেয়ার সার্ভিস। হাসপাতালে মোট শয্যার সংখ্যা ৭৫০টি। এর মধ্যে আছে ১০০টি আইসিইউ ও ১০০টি ইমার্জেন্সি শয্যা। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য এ হাসপাতালকে ৫টি স্পেশালাইজড সেন্টারে ভাগ করা হয়েছে। এখানে আছে দুর্ঘটনা ও জরুরি চিকিৎসাকেন্দ্র, হৃদরোগ ও স্নায়ুরোগ সেবাকেন্দ্র, হেপাটোবিলিয়ারি ও যকৃৎ প্রতিস্থাপনকেন্দ্র, কিডনি রোগকেন্দ্র এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য বিশ্ব দরবারে

মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার এ পর্যন্ত সারা দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ‘কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এই রেজুলেশনটি কো-স্পন্সর করে।
    
ওষুধ শিল্পে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে দেশে। বাংলাদেশে ২১৩ স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, যা দেশের মোট ওষুধের চাহিদার ৯৭ শতাংশ পূরণ করছে। অপর দিকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ওষুধ আমদানি করে। ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত বাংলাদেশে ওষুধের বাজারের আকার ছিল ৩ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। গত ১ দশকে বাজার ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে এটি ৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, লিকুইড প্রিপারেশন, ড্রাই সাসপেনশন, ইনজেকশন, ন্যাজাল স্প্রে ও স্যাশের মাধ্যমে গ্র্যানিউল সহ প্রায় সব ধরনের ডোসেজ উৎপাদনে সক্ষম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ওষুধ রপ্তানি ১১ শতাংশেরও বেশি বেড়ে ১৮৮ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানায়, দেশীয় ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে বিশ্বের অন্তত ১৫৭টি দেশে ওষুধ রফতানি করছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও নীতির ফলে ওষুধ রফতানি ও দেশীয় বাজারের আকার প্রতিনিয়তই বড় হচ্ছে। এশিয়ার ৪৩টি, দক্ষিণ আমেরিকার ২৬টি, উত্তর আমেরিকার ছয়টি, আফ্রিকার ৩৯টি, ইউরোপের ৩৮টি ও অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি দেশে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। বর্তমানে সারা দেশে ২৯৫টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে প্রায় ৪৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল। এছাড়া দেশের ২৮৪টি ইউনানি ও ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭১টি হোমিওপ্যাথিক ও ৩১টি হার্বাল ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন করছে।

বাসস্থান
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে একটি মানুষও ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানা বিহীন থাকবে না’- এই অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। শেখ হাসিনা বলেছেন, ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৪০ হাজার পরিবারকে বিনাপয়সায় ঘর প্রদান করেছি। আর একটি মানুষও বাদ থাকলে তাকে আমরা করে দেব।
    
শুধু বাস্তুহারা নয়; দলিত-হরিজন, বেদে, ভিক্ষুক, বস্তিবাসী, দুস্থ-মুক্তিযোদ্ধা, প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া জনগোষ্ঠী, উপকূলীয় দুর্যোগে বাস্তুহারা মানুষ সহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি আবাসন প্রদান করা হচ্ছে।


১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের শুরু থেকে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যারাক, ফ্ল্যাট, বিভিন্ন প্রকার ঘর ও মুজিববর্ষের একক গৃহে মোট ৫ লক্ষ ৭ হাজার ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২৩৮,৮৫১টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক একক গৃহ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। মুজিববর্ষে প্রথম পর্যায়ে  ২১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে ৬৩ হাজার ৯৯৯ টি পরিবারকে  জমির মালিকানাসহ ঘর প্রদান করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০ জুন ২০২১ তারিখে ৫৩ হাজার ৩৩০টি পরিবারকে অনুরূপভাবে গৃহ প্রদান করা হয়। বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণাধীন রয়েছে আরও ৬৫ হাজারেরও অধিক ঘর। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩টি পরিবারকে জমিসহ সেমিপাকা একক ঘর প্রদান করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দৃঢ় প্রত্যয়ের প্রমাণ রেখেছেন।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রে রোহিঙ্গা কিশোরীকে ধর্ষণ

ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জমি ও গৃহ প্রদান ইতিহাসে প্রথম ও সর্ববৃহৎ উদ্যোগ। রাষ্ট্রের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে মূলস্রোতে তুলে আনার জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাসগৃহ নির্মাণ করে জমির চিরস্থায়ী মালিকানা দেওয়া হচ্ছে। জমি কেনার জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার উদাহরণ বিশ্বে কয়েকটি দেশে পাওয়া যায়, কিন্তু বিনামূল্যে ঘরসহ জমির মালিকানা দেয়ার ঘটনা বাংলাদেশেই প্রথম।  

জুলাই ২০২০ পর্যন্ত, ভিক্ষুক পুনর্বাসনের লক্ষ্যে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৬৯১টি ভিক্ষুক পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।

দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩২০ টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের জন্য ২৩৪টি টং ঘর ও বিশেষ ডিজানের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি প্রকল্প গ্রামে ফলদ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপণ, প্রকল্পগ্রামে বসবাসরত উপকারভোগীদের জীবনমান সহজীকরণের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে আরও ১২ জেলা

বস্তিবাসীদের আবাসন সুবিধা 
২০২১ সালের ৩ আগস্ট, মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত বস্তিবাসীদের জন্য ৩০০  ফ্ল্যাটের বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর মধ্য দিয়ে আরেকটি মানবিকতার নজির সৃষ্টি করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালে  এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। ওই বছরের ২৬ অক্টোবর এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

সরকারি উদ্যোগে বস্তিবাসীদের জন্য নির্মিত এসব ফ্ল্যাটে আধুনিক সব সুবিধা রাখা হয়েছে। তবে ফ্রি নয়, মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় এখানে থাকবেন নগর জীবনের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত বস্তির মানুষেরা।  

১১ নম্বর সেকশনে বস্তিবাসীদের জন্য সর্বমোট ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ১৪৮ কোটি টাকা। মঙ্গলবার ৩০০ পরিবারের হাতে বরাদ্দপত্র দেওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে আরও ১০০১টি পরিবারকে। ওই বস্তিতে থাকা ১০ হাজার পরিবার নতুন ফ্ল্যাটে থাকার সুযোগ পাবেন। ধাপে ধাপে ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।

চাঁদপুর শহরের স্বর্ণখোলা কলোনীর হরিজন সম্প্রদায়ের ৮৮ পরিবার পাচ্ছে দুইটি পাঁচ তলা ভবনে আলাদা আলাদা ফ্লাট। হরিজন সম্প্রদায়ে স্বল্প ব্যয়ে আবাসন প্রকল্পের অংশ হিসেবেই ভবন দুইটি করা হচ্ছে। যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।  

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৩০টি ঘর পাচ্ছেন সমাজের অবহেলিত হরিজন সম্প্রদায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৌজা থানায় হরিজন পল্লি গড়ে তোলা হচ্ছে।  

অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার ‘বীর নিবাস’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও প্রয়াত যুদ্ধবীরদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ‘বীর নিবাস’ নামের আবাসন প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৩০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে।

ইতোমধ্যে ২০২৩ এর ১৫ ফেব্রুয়ারি, পাঁচ জেলায় পাঁচ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে এই নিবাসের চাবি হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মানসম্পন্ন আবাসন নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

শিক্ষা
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশাল বিপ্লব এসেছে। বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলকে সরকারিকরণ করেছেন। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিশুর শতকরা হার ছিল ৬১। বর্তমানে তা উন্নীত হয়েছে শতকরা ৯৭.৭ ভাগে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ছয়টি। বর্তমানে দেশে ৫২টি পাবলিক ও ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩১ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।

পিছিয়ে পড়া মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছে বর্তমান সরকার। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে মাদ্রাসা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ শিক্ষায় অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। কওমি মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে বিশ্বমানের শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দেশে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।

সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা আর শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে ঘটেছে বিপ্লব। প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ৫১ শতাংশ। দুই কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৬৯১ শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী এক কোটি নয় লাখ ৯১ হাজার ৪৫১ জন। প্রাক-প্রাথমিকে ৫০ দশমিক ৩০ শতাংশ নারী। ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯২ জনই নারী। মাদ্রাসায় ৫৫ দশমিক ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী। ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ১৩৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২১ লাখ তিন হাজার ৫৭২ জন। এর মধ্যে দাখিল স্তরে ৬০ দশমিক ৪৭ শতাংশ, আলিমে ৫৬ দশমিক ৩০ শতাংশ, ফাজিল পর্যায়ে ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং কামিলে ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক