ভাইরাল ‌‘প্রতারক’ ওয়াহিদ সম্পর্কে যা জানা গেল...  

সংগৃহীত ছবি

ভাইরাল ‌‘প্রতারক’ ওয়াহিদ সম্পর্কে যা জানা গেল...  

অনলাইন ডেস্ক

এক দিন পর মেয়ের বিয়ে। সেই বিয়ের জন্য পাঁচ হাজার টাকা ধার নিতে ঢাকায় আত্মীয়ের কাছে এসেছেন। কিন্তু সেই আত্মীয় টাকা না দেয়ায় রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে কারও সঙ্গে দেখা হলেই দুঃখের কথা বলে কান্নাকাটি করে টাকা নিচ্ছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিচ্ছেন ওই ব্যক্তি। মানবিকতা দেখিয়ে ভিডিও করা ব্যক্তি তাকে ৬ হাজার টাকা দেন।

একইসঙ্গে ভিডিও দেখে মেয়ের বিয়ের জন্য সাহায্য চাওয়া ব্যক্তিটির কথা অনেকের হৃদয় ছুঁয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি দেখে অনেকে তার মেয়ের বিয়ের পুরো দায়িত্ব নেবেন বলে জানান।

এমন ঘটনার পর থেকে সেই ব্যক্তিকে সাহায্যের জন্য খুঁজতে নামে সিরাজগঞ্জের বেশ কিছু সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ। অবশেষে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় ও ঠিকানা পাওয়া গেছে। মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ওই ব্যক্তির নাম ওয়াহিদ মোল্লা। তিনি পাবনার বেড়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পাইখন্দ গ্রামের মৃত বাহের উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে। তারা সাত ভাই ও দুই বোন। ২০-২২ বছর আগে তার মা নূর খাতুন মারা যান। আর ১১ বছর আগে মারা যান তার বাবা।

জানা গেছে, নানা প্রান্তে এমন প্রতারণা করা ওয়াহিদ মোল্লা আগে থেকেই নেশাগ্রস্ত ও প্রতারক ছিল। ছোটবেলা থেকেই তার প্রতারণা ও জীবনযাপনের বর্ণনা দিয়েছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী। মেয়ের বিয়ের জন্য সহযোগিতা চাওয়া ওয়াহিদের মেয়েও নেই।  

প্রায় ১৮ বছর আগে বাড়ি থেকে হঠাৎ ফেরারি হন ওয়াহিদ। এর মধ্যে দু-একদিন এলেও শুধু রাতটুকুও থাকতেন। সর্বশেষ গত ৭ বছর আগে বাড়িতে এসেছিলেন পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২ শতাংশ জমি বিক্রি করার জন্য। সেই দিনই আবার বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকায় ফিরে যান। এরপর আর বাড়িতে আসেনি।

প্রায় ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে বেড়া পৌরসভার পায়না গ্রামে প্রথম বিয়ে করেন ওয়াহিদ। বিয়ের দেড় বছর পর একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয় তাদের। নেশাগ্রস্ত ও প্রতারক হওয়ায় বিয়ের শুরু থেকেই সংসারে অশান্তি চলতে থাকে। এরপর সেই স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।

এর ছয় মাস পর বেড়ার চাকলা ইউনিয়নের পাচুরিয়াতে আরেকটি বিয়ে করেন ওয়াহিদ। স্বামী নেশাগ্রস্ত হওয়ায় বিয়ের ৪-৫ মাসের মাথায় দ্বিতীয় স্ত্রীও তাকে তালাক দিয়ে চলে যান। এরপর ওয়াহিদ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হন।  

গত দুই-তিন দিন আগে মেয়ের বিয়ের কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়া, এরপর সেই টাকা দিয়ে মদ খাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পারেন।

ওয়াহিদের ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন, ওয়াহিদের প্রথম স্ত্রীর একটি ছেলে সন্তান আছে। তারা গাজীপুরে কাজকর্ম করে জীবনযাপন করছে। ডিভোর্সের পর সে (ওয়াহিদ) নিরুদ্দেশ হলে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। ৭ বছর আগে একবার বাড়িতে এসেছিল। এখন আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। ভিডিও দেখে আমরা বিষয়টি জানতে পারি।  

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। ঘটনাটি ঢাকায় ঘটেছে। তবে তার বাড়ি যে এখানে সেটা জানতাম না।
news24bd.tv/Aa