মা ঝিয়ের কাজ করায় মেয়ের আত্মহত্যা

মা ঝিয়ের কাজ করায় মেয়ের আত্মহত্যা

বরগুনা প্রতিনিধি

অভাবের সংসারে অসুস্থ বাবা অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অসুস্থ স্বামীকে একটু স্বস্তি দিতে তার স্ত্রী স্থানীয় একটি উন্নয়ন সংগঠনে কাজ নিয়েছিলেন রান্না-বান্নার। মা ঝিয়ের কাজ করবে বিষয়টি নিয়ে বাঁধ সাধেন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে ফাতেমা আক্তার(১৭)।

বিভিন্ন সময় বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের কাছে বিদ্রুপের শিকারও হতে হয় তাকে।

অবশেষে অভাবের তাড়নায় মা ঝিয়ের করার সিদ্ধান্ত কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মেনে নিতে না পারায় অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টায় বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহত ফাতেমা আক্তার খাজুরতলা গ্রামের আশ্রাব আলী ও তাসমিলা বেগমের সন্তান। সে আমতলী সরকারী কলেজে
একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করতেন।

স্থানীয় ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, নিহতের বাবা আশ্রাব আলী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যাধিতে ভুগছিলেন তারপর জীবন ও জীবিকার তাগিদে অটো চালিয়ে সংসার চালাতেন। অভাবের সংসার হলেও আশ্রাব আলী দিনরাত পরিশ্রম করে মেয়েকে পড়াশোনা করাতেন। অসুস্থ স্বামীর স্বস্তির জন্য নিহতের মা তাসলিমা বেগম বাড়ির পাশে হীড বাংলাদেশ নামক একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের স্টাফদের রান্নার দায়িত্ব নেয়। এতে মেয়ে অসম্মান বোধ করে। মেয়ে তার মাকে
বোঝাতে চেয়েছে তুমি মেস বাসায় ঝিয়ের কাজ করলে আমার সম্মান থাকবে না।

মা মেয়ের কথার অবাধ্য হয়ে কাজ শুরু করে। বৃহস্পতিবার মেয়ে কলেজ থেকে এসে শুনতে পায় মা কাজ করতে গিয়েছিল। এ বিষয় নিয়ে মা এবং মেয়ের মধ্য ঝগড়া হয়। রাত সাড়ে ৯ টায় মেয়ে অভিমান করে ঘরের দোতলায় উঠে ফাঁস দেয়। মা দেখে
দ্রুত নামালেও বাঁচাতে পারেনি মেয়েকে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ এসে ফাতেমা বেগমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা নিয়ে যায়।

মেয়ের বাবা আশ্রাব আলী বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। অটো চালিয়ে বাড়িতে এসে শুনতে পাই ফাতেমা অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়েটাকে নিয়ে কতোই না স্বপ্ন ছিল সব স্বপ্ন মাটি করে দিল।

ফাতেমা বেগমের মা তাসলিমা বলেন, আমাকে কাজ করতে নিষেধ করেছিল। আমি ওর কথা শুনিনি। আমি মানুষের বাসায় কাজ করলে আমার মেয়ে তার বন্ধু-বান্ধবের কাছে ছোট হবে এ কারণেই আত্মহত্যা করেছে।

এবিষয়ে বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আজিজুল হক বলেন, আত্মহত্যার ঘটনা শুনে আমরা গিয়ে লাশ উদ্ধার কওে নিয়ে আসি ময়নাতদন্তের জন্য। পরিবারের দাবি মেয়েটি মায়ের সাথে অভিমান কওে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের
রিপোর্ট হাতে আসলে আসল ঘটনা জানা যাবে । আমরা মেয়েটির একটি টাচ মোবাইল পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে দেখব কী কারণে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেন জানান ওসি।

news24bd.tv তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক