বিয়ের মাত্র ১৭ দিন পার না হতেই নববধূকে নিজ ঘরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার কেন্দ্রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় চা দোকানদার আব্দুল জলিলের ঘরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তার সদ্য বিবাহিত কন্যা ঝর্ণা আক্তারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এসময় পাশের বাসার জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী ঘরের ভেতরে মারামারির শব্দ শুনে দোকানে গিয়ে আব্দুল জলিলকে খবর দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, ঘটনার পর আব্দুল জলিলের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ঝর্ণাকে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, মাত্র গত ১৭ দিন আগে উপজেলার জোড্ডা গ্রামে আপন ফুফাত ভাই আব্দুল্লার সঙ্গে মোবাইলে বিয়ে হয় ঝর্ণার। দোকানদার আব্দুল জলিলের স্ত্রী গত কয়েক বছর আগে মারা গেছেন।
গত কয়েকদিন আগে ঝর্ণার মোবাইল চুরি হয়। এ নিয়ে ঝর্ণার ভাবি ও পাশের বাড়ির মেয়ের বান্ধবীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা বাবা আব্দুল জলিলের।
আব্দুল জলিল বলেন, জয়নাল ভাইয়ের স্ত্রী ঘরে আওয়াজ শুনে আমার কাছে ছুটে আসে। আমি বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে। রক্তে পুরো ঘর ভেসে গেছে। গত কয়েকদিন যাবত আমার মেয়ের মোবাইল চুরি হওয়া নিয়ে আমার ছেলে শাহীনের স্ত্রী কলি আক্তার ও মেয়ের বান্ধবী পাশের বাড়ির খুকির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।
তিনি বলেন, মোবাইল চুরির ঘটনায় শাহীনের স্ত্রী কলি ও মেয়েরা বান্ধবী খুকি একে অপরকে দোষারোপ করে। এনিয়ে খুকি ও তার পরিবারের লোকদের সঙ্গে আমার পুত্রবধূর ঝগড়া হয়।
পরে মোবাইল কে বা কাহারা আমাদের ঘরে রেখে যায়। আমার পুত্রবধূ শুক্রবার আমার ছেলেসহ তার বাবার বাড়ি উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে বেড়াতে যায়। আমার স্ত্রী জীবিত না থাকায় ও তার ভাবি বেড়াতে যাওয়ায় ঘরে মেয়েটি একা ছিল। আমার মনে হয় এ মোবাইল চুরির ঘটনাই আমার মেয়ের জন্য কাল হয়েছে। আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আমি তাদের ফাঁসি চাই।
জানতে চাইলে নাঙ্গলকোট থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
