সুজানগরে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে দুপুরের খাবার চালু

সংগৃহীত ছবি

সুজানগরে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে দুপুরের খাবার চালু

অনলাইন ডেস্ক

পাবনার সুজানগরের প্রত্যন্ত গ্রাম মথুরাপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে প্রতিমাসে একবার দুপুরের খাবার চালু করলেন সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম। তিনি ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছেন মানবিক ইউএনও হিসেবে।

আজ সোমবার উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের প্রতন্ত গ্রাম মথুরাপুরে দেশের সুনামধন্য শিল্পগ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপের শুভসংঘ স্কুলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৪০ জন শিক্ষার্থীকে দুপুরের খাবার (খিচুরি ও মুরগির মাংস) খাওয়ান তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সুজানগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল জব্বার, কালের কণ্ঠ পাবনা জেলা প্রতিনিধি প্রবীর সাহা,  কালের কণ্ঠ পাবিপ্রবি সংবাদদাতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, বসুন্ধরা শুভসংঘের সুজানগর উপজেলা শাখার সভাপতি আফজাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শুভসংঘ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার, সহকারী শিক্ষক শারমিন খাতুনসহ এলাকার গণ্যমান্যরা।

বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, ‘সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা খুব খুশি হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুলে আসার প্রবণতা বাড়বে। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের পক্ষ থেকে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ’

গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুই বাংলার জনপ্রিয় একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলটি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি আলোকিত করেন পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়া) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির।

বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের অভিভাবক জলি খাতুন বলেন, ‘সুজানগর উপজেলা ইউএনও স্যার প্রতিমাসে দুপুরের খাবার দিবে এটা শুনে বাচ্চারা খুশি হয়েছে। আমাদের কাছেও ভালো লেগেছে। এ রকম কার্যক্রম চালু রাখলে স্কুলের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়বে। ’

বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের অভিভাবক বীণা খাতুন বলেন, ‘এখানকার বেশিরভাগ পরিবারই অসচ্ছল। বাচ্চারা যেদিন শুনেছে স্কুলে খাবার দিবে তখন থেকেই বলাবলি শুরু করেছে। আজকে সকালে তাড়াতাড়ি আমাকে স্কুলে নিয়ে এসেছে। আমরা চাই প্রতি মাসেই এমন আয়োজন থাকুক। ’

বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থী আরাফ হোসেন বলে, ‘খাবার অনেক মজা হয়েছে, এই প্রথম স্কুলে খাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। ’ আরেক স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থী আসাদ হোসেন বলে, ‘স্কুলে এসে খুব খিদে লাগছিল বন্ধুদের সঙ্গে বসে খায়ে খুব ভালো লাগছে। ’

সুজানগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল জব্বার বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ সুজানগরের মথুরাপুরে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে সেজন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই, আমাদের পক্ষ থেকে এই স্কুলকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে। ’

সুজনগর উপজেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, ‘সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যেভাবে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের পাশে দুপুরের খাবার নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সেজন্য বসুন্ধরা শুভসংঘ সুজানগর উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে তরিকুল ইসলাম স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ’

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র শিশুদের পড়াশোনার জন্য ‘বসুন্ধরা গ্রুপ ‘শুভসংঘ স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকায় স্থাপিত এসব স্কুল শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। সুজানগর উপজেলায় একটি স্কুল চালু হয়েছে গত ২৩ সেপ্টেম্বর, আজ এখানে এস ভালো লাগছে ৪০ জন সুবিধা বঞ্চিত শিশু এখানে ভর্তি হয়েছে, তাদেও দেখে ভালো লাগছে। অনেক দরিদ্র শিশু এখানে বিনামূল্যে শিক্ষা নিচ্ছে। এর চেয়ে ভালো কাজ আর কী হতে পারে?’

শিক্ষার্থীদের মাসে একবার দুপুরে খাবারের আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের খাওয়াতে পারলে নিজের কাছে তৃপ্তি লাগে। এই কাজটা করার চেষ্টা সবসময় আমার থাকে। এটা সমাজের মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আমাদের সকলেরই কর্তব্য। আমি চাই সমাজের বৃত্তবানরা এসব সামাজিক কাজে এগিয়ে আসুক। তারা যদি সুবিধাবঞ্চিত স্কুলে শিক্ষার্থীদের অনন্ত একবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে তাহলে স্কুলে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া বন্ধ হবে। ’

এই রকম আরও টপিক