কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগের চমক হতে পারেন আকবর আলী সরকার

কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগের চমক হতে পারেন আকবর আলী সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত উত্তর জনপদের জেলা কুড়িগ্রাম-২ আসন। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বদলেছে উত্তরের এই জনপদের চিত্র। তাই কুড়িগ্রামে এবার আওয়ামী লীগের চমক হতে পারেন  আকবর আলী সরকার। কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আকবর সরকারকে নিয়ে দলের জন্য এই আসনটি নৌকার করতে চান স্থানীয় নেতারাও।

সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আকবর সরকার কুড়িগ্রাম ২ আসন থেকে নৌকার কান্ডারি হলে এলাকার উন্নয়ন আরও গতি পাবে এমনটাই বলছেন স্থানীয়রা।

কুড়িগ্রাম-২ আসনটি ছয়বার দখলে রেখেছেন লাঙল প্রতীকের প্রার্থীরা। জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদও এই আসনে নির্বাচন করেছেন। ফলে, জনগণের মধ্যে লাঙল প্রতীকের প্রভাব আছে।

তবে, দীর্ঘদিন জাতীয় পার্টির দখলে থাকায় এখানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল।

এই পরিস্থিতির পরিবর্তন চাইছেন নেতাকর্মীরা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে একজন দক্ষ সংগঠক ও পরীক্ষিত কর্মীবান্ধব নেতাকে নৌকার মাঝি হিসেবে দেখতে চান তারা।

এলাকায় আকবর আলী সরকার আওয়ামী লীগের ত্যাগী, পরিশ্রমী, সৎ ও সজ্জন সংগঠক হিসেবে পরিচিত। তার জনপ্রিয়তা এই সংসদীয় আসনের বাইরেও প্রশংসনীয়। তিনি ১৯৬৭ সালে কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের সাধারণ সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হন। তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন নির্বাচনী সভা ও সমাবেশে সরসরি অংশ নেন।

ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য ও সহায়তা করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মনোনীত হন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার বন ও পরিবেশবিষক সম্পাদক মনোনীত হয়ে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নাজিমখাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ১৯৮১ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৮৪ সালে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯১ সালে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

একই ইউনিয়নে ২০০৫ সালে কাউন্সিলে সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সভাপতির মৃত্যুর পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। একই সময়ে তিনি রাজারহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পরবর্তীতে যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগে সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশনকে সামনে রেখে কুড়িগ্রাম-২ আসনের অধীন এলাকায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন আকবর। বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশ মেনে রাজারহাট উপজেলায় নদীভাঙনের ফলে গৃহহীন মানুষের কল্যাণে অস্থায়ী নিবাস হিসেবে প্রায় ৭৫টি একচালা টিনশেড ঘর তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছেন তিনি। এলাকাটি নদীভাঙন কবলিত হওয়ার কয়েক বছর ধরে নিয়মিত ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে শীতবস্ত্রও বিতরণ করছেন ধারাবাহিকভাবে। নিজ এলাকাসহ আশপাশের তিন উপজেলায় তিনি প্রতিবন্ধী এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে শ’খানেক অত্যাধুনিক হুইল চেয়ার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তায় পাকা নলকূপ স্থাপন করে হাজার হাজার মানুষের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছেন।

করোনা মহামারির সময় আকবর আলী সরকার পুরো কুড়িগ্রামের মানুষের কাছে আশীর্বাদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে কুড়িগ্রামের সব উপজেলায় মানুষের জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর মেশিন, মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজার ও সাবান এবং কিছু ক্ষেত্রে শুকনো খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। তার এই সাহসিকতাপূর্ণ ও মানবিক উদ্যোগের কারণে সে সময়ের জেলা-উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নেতাকর্মী ও সচেতন মহলসহ সকল শ্রেণির মানুষ তার প্রশংসা করেছেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি কুড়িগ্রামের নয়টি উপজেলা হাসপাতাল এবং জেলা সদর হাসপাতালে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর মেশিনসহ সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করেছেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আকবর আলী সরকার বলেছেন, ‘প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন চাইব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা সকল বিষয় বিবেচনা করে আমাকে মূল্যায়ন করলে জনগণ আগামী নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-২ আসনে আমার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি করবে এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আমার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ’

news24bd.tv তৌহিদ