বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির সঙ্গে আজও লড়াইয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির সঙ্গে আজও লড়াইয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়

মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯৭১ সালে জন্ম সজীব ওয়াজেদ জয়ের। যুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে একাধিক পরাজিত শক্তির সঙ্গে লড়াই করে যেতে হয়েছিলো তার নানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির হাতে বঙ্গবন্ধু যখন সপরিবারে নিহত হন তখন ভাগ্যক্রমে তার মা ও খালার সঙ্গে বেঁচে যান সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অন্য সদস্যের মতই বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির সঙ্গে লড়াই করে যেতে হয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়কে।

১৯৭৫ সালে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা যখন নির্বাসিত, এমন এক সময় শিক্ষা জীবন শুরু সজীব ওয়াজেদ জয়ের। ভারতে স্কুল ও কলেজ জীবন শেষে সেখানেই সেন্ট জোসেফ কলেজ হতে স্নাতক পাশ করেন সজীব ওয়াজেদ। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এ্যট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেন। পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক-প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ডিজিটালি রূপান্তরের স্বপ্ন দেখেন তিনি। ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগের ঘোষণা করা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মূল রূপকার ছিলেন তিনি। বর্তমান আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন কর্মতৎপরতা এবং দেশের সরকারি সকল কার্যক্রমকে ধীরে ধীরে ডিজিটাল ব্যবস্থায় রূপান্তরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। তার দেখিয়ে দেয়া রূপরেখা অনুসারেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ পেয়েছে এবং বর্তমানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি স্মার্ট বাংলাদেশের পথে।

বাংলাদেশকে বিনির্মাণে ভূমিকা রাখা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রকে সর্বদাই লড়াই করতে হয়েছে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে। তাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত বিতর্ক ও গুজবের জন্ম দিয়েছে জামায়াত-বিএনপি। বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করায় সবচাইতে বড় অবদান রাখা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ নিয়ে প্রথম গুজব সৃষ্টি বিএনপি। তৎকালীন সময় বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, 'সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে যেই পরিমাণ বেতন গ্রহণ করেন, রাষ্ট্রপতিও ততটাকা বেতন পাননা। ' কিন্তু পরবর্তীতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগের চিঠিতে দেখা যায়, তাকে অবৈতনিক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

বিএনপি'র 'প্রিন্স' হিসেবে পরিচিতি তারেক রহমানের অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সাক্ষ্য প্রদান করেছে। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তথ্য দিয়েছে সিঙ্গাপুরের পুলিশ। অথচ সেই বিএনপি সজীব ওয়াজেদ জয়ের অর্থ সম্পদ নিয়ে গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে থাকে।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মতই বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য গুজবের শিকার হয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সম্প্রতি এক গুজব ছড়ানো হয়, সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে মার্কিন ট্রেজারারি বিভাগ। (https://www.youtube.com/watch?v=-cyRO10k4jk) কিন্তু ট্রেজারি বিভাগ থেকে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি সজীব ওয়াজেদ জয়ের কোন সম্পত্তি এবং কত মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এমন কোন তথ্যও মেলেনি।

অপর এক গুজবে বলা হয়, সজীব ওয়াজেদ যুক্তরাষ্ট্রে নেই, যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ও ট্রেজারারি বিভাগ সবাই খুঁজছে তাকে (https://www.youtube.com/watch?v=htwb0ybslYM)। আরও প্রচার করা হয়- মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না সজীব ওয়াজেদের (https://youtu.be/gBiy6bh-mD4?si=7LLE11ja7-ilHI4R)। এমন সব গুজব যখন ঘুরে বেড়াচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মী ও গুজবকারীদের সামাজিক যোগাযোগ অ্যাকাউন্ট জুড়ে, তখন সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের প্রধানমন্ত্রী ও তার মা শেষ হাসিনার জন্মদিন পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে উদযাপন করছেন। তার একটি ছবিও তিনি প্রকাশ করলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।  

(https://web.facebook.com/sajeeb.a.wazed/posts/862395195244777) এক ছবিতে দীর্ঘ ৪-৫ মাসের বেশি সময় ধরে তৈরি করা গুজবগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সজীব ওয়াজেদকে নিয়ে এ ধরণের গুজব প্রচার করেন বিএনপি-জামায়াতের ইলিয়াস, কনক, পিনাকি এবং নাগরিক টিভি নামক পোর্টাল।

এই ছবি প্রকাশের পর শুরু হয় নতুন গুজব, ছবিটিকে ২০১৮ সালে তোলা হয়েছে বলে জানান অনেকে। কিন্তু সেই তথ্যও শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। পরবর্তীতে জামায়াত-বিএনপির বিভিন্ন পেজ থেকে নতুন গুজব পাওয়া যায়, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে খুঁজছে ইন্টারপোল। তার ওপর রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। তিনি কোথায় আছে কেউ জানে না। ‘ অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন পার হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন তিনি। এমনকি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডে তরুণদের হাতে পুরষ্কার তুলে দিতে তাকে সরাসরি দেখেন দেশের লাখ লাখ মানুষ।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে সকল গুজব মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় এবার নতুন গুজব নিয়ে সামনে এসেছেন ইলিয়াস এবং চন্দন নন্দী। এর আগে ‘সজীব ওয়াজেদ সিঙ্গাপুরে’ বলে মিথ্যা প্রচার করার জন্য ক্ষমা না চেয়ে নতুন এক গুজব নিয়ে হাজির হন তিনি। ইলিয়াস জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে চলে এসেছেন সজীব ওয়াজেদ। আর কখনও সেখানে ফেরত যেতে পারবেন না। ভিডিওর শিরোনামে তিনি লেখেন, 'আমেরিকায় ৬২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ফেলে দেশে ফিরলেন জয়' (https://www.youtube.com/watch?v=o13AkPp9eg4)। অনেকটা একই ভাষা ব্যবহার করেছেন চন্দন নন্দী। নিয়মিত সজীব ওয়াজেদ জয় সহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তথ্যসূত্রহীন মন্তব্য কলাম লিখে এরই মধ্যে ভারতীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন চন্দন নন্দী। সজীব ওয়াজেদ জয় ঢাকায় এলে আর আগেও কখনও তাকে এয়ারপোর্টে সংবর্ধনা বা বড় কোন শোডাউন করেনি আওয়ামী লীগ। বরং ঢাকায় আসার পর যখন তিনি কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তখনই তাকে নিয়ে সংবাদ বা তার বক্তব্য প্রচার হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাংলাদেশে এলে সাধারণত কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হতে হলে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গেই সময় কাটান বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র।

কিন্তু এবার তার সেই নিয়মিত আচরণকে কেন্দ্র করেই প্রশ্ন তুলেছেন চন্দন নন্দী। তার ভাষ্যমত, এবারই প্রথম সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে আসার পর আওয়ামী লীগ কিছু জানায়নি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সজীবো ওয়াজেদ জয় দেশে এলে অতীতেও আওয়ামী লীগ কখনও বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি। তিনিও ইলিয়াসের মতই সজীব ওয়জাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যাওয়া নিয়ে ‘শঙ্কা প্রকাশ’ করেন।  নেটিজেনরা মনে করছেন, সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরলে হয়ত তখনও ভুল বলার জন্য দুঃখ প্রকাশ না করে নতুন কোন বিষয় নিয়ে গুজব তৈরি করা হবে তাকে নিয়ে।

news24bd.tv/desk

এই রকম আরও টপিক