সুরা মুলক পাঠের ফজিলত

সংগৃহীত ছবি

সুরা মুলক পাঠের ফজিলত

অনলাইন ডেস্ক

সুরা মুলক পবিত্র কোরআনের ৬৭ নম্বর সুরা। এ সুরা তিলাওয়াতকারীকে কবরের আজাব স্পর্শ করতে পারবে না। কবরের আজাব থেকে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেবেন। কবরের আজাব অত্যন্ত ভয়াবহ।

মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণী কবরের আজাব বুঝতে পারে, শুনতে পারে। নবীজি সা. বলেন, মানুষ দাফন করতে ভয় পাবে; নইলে আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতাম, তিনি যেন তোমাদের কবরের আজাব শোনান।

সুরা মুলক-এর ফজিলত
নবীজি সা. কী ভাষায় কবরের আজাব থেকে পানাহ চাইতেন তা-ও বর্ণিত হয়েছে হাদিস শরিফে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. দোয়ায় বলতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি কবরের আজাব থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

জাহান্নামের শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আরও আশ্রয় প্রার্থনা করছি, জীবন-মৃত্যু ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে। (বুখারি ১৩৭৭)।
 
কবরের আজাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার সাথে সাথে একটি আমলও আমাদেরকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করবে। তা হলো, সুরা মুলকের আমল। এ সুরা তার আমলকারীর জন্য কবরের আজাবের সামনে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন (সুরা মুলকের আমলকারী) ব্যক্তিকে যখন কবরে রাখা হবে, (আজাবের) ফিরিশতারা তার পায়ের দিক থেকে আসবে; তখন পা বলবে, এদিক দিয়ে তোমরা তার পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না। সে (আমার ওপর ভর করে) নামাজে দাঁড়িয়ে সুরা মুলক তিলাওয়াত করত।
 
এরপর বুক অথবা পেটের দিক থেকে এলে তা বলবে, এদিক থেকেও তোমরা তাকে কিছু করতে পারবে না; সে তো সুরা মুলক তিলাওয়াত করত (আমার মাঝে সুরা মুলক ধারণ করত)। মাথার দিক থেকে এলে বলবে, আমার দিক থেকেও তোমাদের তার পর্যন্ত পৌঁছা সম্ভব নয়; সে তো সুরা মুলক তিলাওয়াত করত (আমার মাঝে সুরা মুলক সংরক্ষণ করত)।
 
হযরত ইবনে মাসউদ রা. বলেন, এ সুরা ‘মানিআহ’-বাধা দানকারী; ব্যক্তি থেকে কবরের আজাব রুখে দেয়। যে ব্যক্তি রাতে এটি তিলাওয়াত করল সে অনেক ভালো ও বড় কাজ করল। (মুসতাদরাকে হাকেম ৩৮৩৯)।
 
নবীজি রাতে সুরা মুলক তিলাওয়াত না করে ঘুমাতেন না। নবীজি সা. অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে সুরা মুলক তিলাওয়াত করতেন। এমনকি রাতে সুরা মুলক ও সুরা সাজদাহ তিলাওয়াত না করা পর্যন্ত ঘুমাতেন না। হযরত জাবের রা. বলেন, নবীজি সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক তিলাওয়াত না করা পর্যন্ত ঘুমাতেন না। (জামে তিরমিজি ৩৪০৪, মুসনাদে আহমাদ ১৪৬৫৯)

রসুল সা. আমাদেরকে কবরের আজাব থেকে পানাহ চাইতে বলেছেন। যায়েদ ইবনে সাবেত রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘তোমরা কবরের আজাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর। ’ (মুসলিম ২৮৬৭)।
 
রসুল সা. নিজেও কবরের আজাব থেকে পানাহ চাইতেন। আয়েশা রা. বলেন, একবার এক ইহুদি নারী তার কাছে এলো। সে কবরের আজাব প্রসঙ্গে আলোচনা করল এবং বলল, আল্লাহ আপনাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন। নবীজি এলে আয়েশা রা. তাকে কবরের আজাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। নবীজি উত্তরে বললেন, হাঁ, কবরের আজাব (সত্য)। আয়েশা রা. বলেন, এর পর থেকে আমি রসুলুল্লাহ সা.-কে দেখেছি, প্রতি নামাজের পরই তিনি কবরের আজাব থেকে পানাহ চাইতেন। (বুখারি ১৩৭২)।
 
সুরা মুলক রাতের বেলা পাঠ করা উত্তম। সাধারণত আলেমরা ইশার নামাজের পর সুরা মুলক পাঠ করার কথা বলেন। বিলম্বে কিংবা বিছানায় শুয়ে পাঠ করাও জায়েজ আছে। হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. ততক্ষণ পর্যন্ত ঘুমাতেন না, যতক্ষণ না সুরা আলিফ লাম মিম তানজিল, সুরা মুলক পড়ে নিতেন। (তিরমিজি ২৮৯২)

news24bd.tv/AA