এমপি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর শীর্ষ জুয়েলারি চোরাকারবারি দিলীপ আগারওয়াল

সংগৃহীত ছবি

এমপি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর শীর্ষ জুয়েলারি চোরাকারবারি দিলীপ আগারওয়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের শীর্ষ জুয়েলারি চোরাকারবারি দিলীপ কুমার আগারওয়াল একজন কুখ্যাত ডায়মন্ড ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। ডায়মন্ডের নামে তিনি ভেজাল-নকল জুয়েলারি বিক্রি করে ক্রেতা সাধারণের সাথে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণা করে আসছেন বলে অভিযোগও রয়েছে।

ভেজাল-নকল সোনা ও ডায়মন্ড বাণিজ্য করে দুই দশকের ব্যবধানে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হন ও বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করে এই প্রতারক ডায়মন্ড ব্যবসায়ী। বিদেশে পাচারকৃত টাকায় ভারত ও অস্ট্রেলিয়ায় খুলেছেন একাধিক জুয়েলারি শো-রুম।

বস্তুত, এই দিলীপ কুমার আগারওয়াল একজন অশিক্ষিত, একেবারেই সাধারণ ও নিম্নশ্রেণীর ব্যবসায়ী হিসেবে জুয়েলারী ব্যবসায় আসেন। তথ্য বলছে, আগাওয়াল তার কর্মজীবনের শুরু থেকেই টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন প্রকার জালিয়াতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

সম্প্রতি প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তোলা ছবি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক বিভিন্ন সুবিধা অনৈতিকভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন এবং এখন এই প্রতারক আওয়ামী লীগ এর মনোনয়ন নিয়ে এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। যা দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাজনক ও চরম ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিলীপ কুমার আগারওয়াল ও তার পরিবার বিগত কোনো সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না এমনকি ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গার বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যক্রম দিলীপ কুমার আগারওয়াল এর অফিসে পরিচালনা করা হয়েছিল। বিএনপি ২০০৮ সালে পরাজিত হওয়ার পর সে সুযোগ সন্ধানী হয়ে আওয়ামী রাজনীতিতে নিজেকে সম্পৃক্ত করে।

অভিযোগ রয়েছে, এর আগে তিনি জাতীয় পার্টির আমলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছেন। এছাড়াও, বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সামসুজ্জোহা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নানকেও জেলে পাঠান।

জানা যায়, এই চোরাকারবারি আগারওয়াল ব্যাংকের পরিচালক হয়ে ব্যাংকের প্রায় হাজার কোটি টাকার উপরে কৌশলে ঋণ করে বিদেশে পাচারসহ গুলশানের অভিজাত ২টি ভবনে কিনেছেন ৭টি ফ্লোর। রাতারাতি হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেনের উৎস ও অর্থ পাচারের ঘটনা খুঁজে দেখলেই দুর্নীতির ভয়াবহ তথ্য পাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

এছাড়াও, বিতর্কিত মডেল পিয়াসার ও পাপিয়ার সঙ্গে রয়েছে তার মাদকের বিস্তর নেটওয়ার্ক। নারীঘটিত কারণে তার এলাকায় ও অনেক কেলেঙ্কারি রয়েছে যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বহুবার প্রচারিত হয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনেও রয়েছে তার নানা কুখ্যাতি। অভিযোগ রয়েছে, আগের স্ত্রীকে দুবাই পাঠিয়ে নিজ কর্মস্থলে কর্মরত অন্যজনের বিবাহিত স্ত্রীকে বিয়ে করে বনানীর একটি ফ্লাটে থাকছেন। ইতোমধ্যে সেই নারীর স্বামী (নন্দ সাহা- মোবাইল ০১৯৩৮----৯৪৭) তাকে ফেরত আনার চেষ্টা করায় তাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন রকম হয়রানি করে আসছেন দিলীপ।

এই কুখ্যাত জুয়েলারি চোরাকারবারির বিভিন্ন অপকর্ম ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন -বাজুসের সদস্যপদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয় এবং বর্তমানে বাজুসে তার কোনো প্রকার সদস্যপদও নেই।

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর