স্বতন্ত্র হিসেবেও নির্বাচনে আসছেন বিএনপি নেতারা

বাঁ থেকে মোহাম্মদ শোকরানা, সরকার বাদল, আখতারুজ্জামান ও বিউটি বেগম

স্বতন্ত্র হিসেবেও নির্বাচনে আসছেন বিএনপি নেতারা

অনলাইন ডেস্ক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে হরতাল অবরোধ পালন করে যাচ্ছে বিএনপি। এদিকে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ সমমনা দলগুলো দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রিসহ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। তবে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও দলটির অনেক সাবেক নেতা নির্বাচনে স্বতন্ত্র বা অন্য কোনো দলের হয়ে ভোটে লড়বেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

  

জানা যায়, বগুড়া থেকে বিএনপির তিন সাবেক নেতা ‘স্বতন্ত্র’ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা হলেন, বিএনপির সাবেক নেতা মোহাম্মদ শোকরানা, সরকার বাদল ও বিউটি বেগম। আর কিশোরগঞ্জ-২ আসনে জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান।  

মোহাম্মদ শোকরানা, সরকার বাদল ও বিউটি বেগম বগুড়ার তিনটি আসন থেকে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) কিংবা তৃণমূল বিএনপি থেকে তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে এদের মধ্যে অন্তত দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে।  

বগুড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান ওই তিন নেতার মনোনয়নপত্র তোলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মোহাম্মদ শোকরানা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও আলোচিত ব্যবসায়ী;  সরকার বাদল সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিউটি বেগম জেলা বিএনপির সাবেক মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।  

মোহাম্মদ শোকরানা বগুড়া-১ আসন (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকার বাদল বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। বিউটি বেগম বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচন করবেন। গুঞ্জন উঠেছে, সরকার বাদল ও বিউটি বেগম বিএনএম থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। যদিও সরকার বাদল ও মোহাম্মদ শোকরানা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

মোহাম্মদ শোকরানা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে আসছে না, আওয়ামী লীগ কোন দুঃখে নির্বাচনে কারচুপি করতে যাবে? ভোট স্বচ্ছই হবে। বিএনপি নির্বাচনে এলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হব না। বিএনপি থেকেই মনোনয়ন চাইব। ’ 

সরকার বাদল বলেন, তিনি সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করলেও কিছু নেতার কারণে তিনি দলে কোণঠাসা। বিএনপিতে ছিলেন, এখনো আছেন। তবে ভবিষ্যতে থাকবেন কি না, সময় বলে দেবে। ’ বিএনএমের মনোনয়নে নির্বাচন করার বিষয়ে বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম থেকে নির্বাচন করার প্রস্তাব পেয়েছি। এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ’

বিউটি বেগম জেলা বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০১৪ সালে দলের সমর্থনে তিনি শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলে তাঁকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বলেন, ‘আপাতত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক দল থেকেই যোগাযোগ করা হচ্ছে, দেখা যাক, সময় বলে দেবে। ’

এদিকে পাঁচবারের মতো বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। এরই মধ্যে তিনি মনোনয়নপত্রও কিনেছেন। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-২। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ। তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন। এবার কিশোরগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগের ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আখতারুজ্জামানের মনোনয়নপত্র নেওয়ার বিষয়টি আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলের নেতা-কর্মীদেরই ভাবাচ্ছে।

আখতারুজ্জামান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কটিয়াদী নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপি যদি নির্বাচনে যায়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী হিসেবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। একটু এগিয়ে থাকার জন্য আগেভাগে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বলে দাবি তাঁর। মনোনয়নপত্র কেনার বিষয়টি কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম নিশ্চিত করেছেন।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক