হারিয়ে যাচ্ছে ডাহুক নদ

হারিয়ে যাচ্ছে ডাহুক নদ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাহুক নদের গতিপথ বন্ধ করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ডাহুক নদ। ভারতে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশে ১৪ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে আবার ভারতে প্রবেশ করেছে ডাহুক। ডাহুকের পশ্চিমে শালবাহান ইউনিয়ন এবং পূর্ব দিকে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের হাজার হাজার একর কৃষি জমি রয়েছে। রয়েছে চা বাগান, আমসহ নানা ফলের বাগান।

স্থানীয়রা বলছেন, এসব চাষাবাদে ডাহুকের বিশাল অবদান রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষাকালে পলি মিশ্রিত পানি ছড়িয়ে দেয় এই নদ। শুষ্ক মৌসুমে ডাহুকের প্রবাহিত পানি চাষাবাদের জমিকে উর্বর করে। ডাহুকে রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ।

সারা বছর ডাহুকে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ টন মাছ আহরণ করে দুই ইউনিয়নের শতাধিক জেলে। এলাকার হাজার হাজার মানুষের আমিষের চাহিদা মেটায় এই মাছ।

কিন্তু বর্তমানে পাথর উত্তোলনের ফলে নদের গতিপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। আসছে শুষ্ক মৌসুমে এই নদ মরে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। যত্রতত্র পাথর উত্তোলনের ফলে ডাহুকের সীমানাও হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় অন্তত ১০০ জন ব্যবসায়ী নদের বিভিন্ন জায়গায় খনন করে ডুবুরিদের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করছে। ফলে নদের কোথাও কোথাও বালির ঢিবি হয়ে যাচ্ছে আবার কোথাও কোথাও বিশাল গর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। এতে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ আটকে যাচ্ছে। নদের জল বিকল্প দিকে প্রবাহিত হওয়ার ফলে দুই দিকের পাড় ভাঙছে। কমে যাচ্ছে কৃষি জমি।

নাওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুখ হোসেন জানান, ডাহুক শেষ। কেউ কিছু বুঝতেছে না। নিজেদের স্বার্থে নদটিকে হত্যা করে পাথর উত্তোলন করছে। আমার ব্যক্তিগত কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। এখানে কয়েকশ জেলে আজ বেকার হয়ে গেছে।

প্রাণ-প্রকৃতি পরিবেশ বিষয়ক বেসরকারি সংগঠন কারিগরের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ জানান, পাথর খেকোরা নদ হত্যার উৎসব শুরু করেছে। অচিরেই অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ করা না গেলে ডাহুক চিরতরে হারিয়ে যাবে।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, বারবার পুলিশ অভিযানে যায়। তখন পাথর তোলা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। অনেক ট্রলি আটক করা হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। আমরা তৎপর রয়েছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে রাব্বি বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। অচিরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/কেআই