এমবাপ্পের গোলে টিকে রইলো পিএসজি, কষ্টের জয় সিটির 

সংগৃহীত ছবি

এমবাপ্পের গোলে টিকে রইলো পিএসজি, কষ্টের জয় সিটির 

অনলাইন ডেস্ক

ভাগ্যিস শেষ বাঁশি বাজার আগে পেনাল্টিটা পেয়েছিল পিএসজি। নয়তো চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে ওঠার সম্ভাবনা প্রায় ফিকেই হয়ে যেত প্যারিসের ক্লাবটির। গতকাল রাতে ইংলিশ ক্লাব নিউক্যাসলের বিপক্ষে হারের পথেই ছিল এমবাপ্পে-দেম্বেলেরা। তবে ইনজুরি সময়ের অষ্টম মিনিটে স্পটকিক থেকে গোল করে পিএসজিকে ১ পয়েন্ট এনে দেন এমবাপ্পে।

এই ড্রতে 'এফ' গ্রুপ থেকে শেষ ষোলতে ওঠার আশা জিইয়ে রাখলো পিএসজি। নিউক্যাসলের সামনেও আছে সেই সুযোগ। এদিকে, গ্রুপের অন্য ম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ৩-১ গোলে হারলেও এসি মিলানের সামনেও থাকছে শেষ ষোলতে খেলার সুযোগ।  

চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বের ড্রয়ের পর মৃত্যুকূপের স্বীকৃতি পায় গ্রুপ ‘এফ’।

তারই প্রমাণ মিললো গ্রুপ পর্বের পাঁচ ম্যাচ শেষে। বরুসিয়া একমাত্র দল হিসেবে শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে। বাদ বাকি তিন দলের সামনেই আছে পরের পর্বে খেলার সুযোগ।  

প্যারিসে এদিন শুরু থেকেই আক্রমণে যায় পিএসজি। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে গোলের কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিল তারা। কিন্তু বল লক্ষ্যে রাখতে না পারায় পাওয়া হয়নি গোলের দেখা। একটু গুছিয়ে নিয়ে নিউক্যাসলও চেষ্টা করে আক্রমণে যাওয়ার। আক্রমণ প্রতি-আক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তোলার চেষ্টা করে দুই দল। এর মধ্যে ম্যাচের ৯ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন এমবাপ্পে।

১২ মিনিটে গোলের সুযোগ এসেছিল নিউক্যাসলের সামনে। কিন্তু এবার গোল করতে ব্যর্থ হন আলেক্সান্দার ইসাক। তবে সেই ইসাকই ফিরতি শটে বল জালে জড়িয়ে প্যারিসকে স্তব্ধ করে দেন ২৪ মিনিটে। যদিও এই গোলের ভিত গড়ে দেন লিভরামেন্তো।

পিএসজি ডিফেন্ডারদের ফাঁদ এড়িয়ে তিনি বল বাড়ান আলমিরনের উদ্দেশ্যে। আলমিরন চেষ্টা করেন বাঁকানো শটে বল জালে জড়ানোর। পিএসজি গোলরক্ষক গিয়ানলুইগি দোন্নারুম্মা তাঁর শট ফিরিয়ে দেন। কিন্তু ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দলকে এগিয়ে দেন ইসাক। সমতা ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠে পিএসজি। দারুণ দুটি সুযোগও আসে তাদের সামনে। যদিও গোল পাওয়া হয়নি প্যারিস পরাশক্তিদের। একটি প্রচেষ্টা অবশ্য দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়েছেন নিউক্যাসল গোলরক্ষক। সব মিলিয়ে প্রথমার্ধে চেষ্টা করেও সমতা ফেরাতে পারেনি পারেনি পিএসজি।

বিরতির পর বাঁচা-মরার ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে পিএসজি। দেম্বেলে-এমবাপ্পেরা চেষ্টা করেন দলকে ম্যাচে ফেরানোর, কিন্তু এদিন যেন কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। পিএসজির আক্রমণগুলো বারবার মুখ থুবড়ের পড়ছিল। এর মধ্যে গোল না হওয়ার কিছু কৃতিত্ব নিউক্যাসলের রক্ষণ এবং গোলরক্ষকেরও। তারাই ফিরিয়ে দিয়েছে পিএসজির একের পর আক্রমণ। কিন্তু কিন্তু পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ার খেসারত ঠিকই দিতে হয়েছে ‘ম্যাগপাই’দের। ম্যাচের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি উপহার দিয়ে বসে পিএসজি। অবশ্য এটি পেনাল্টি ছিল না কি না তা নিয়ে এরই মধ্যে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি এমবাপ্পে। দারুণ এক শটে বল জালে জড়িয়ে দলের আশা ভালোভাবেই বাঁচিয়ে রেখেছেন এই ফরাসি তারকা।

অন্য দিকে ডর্টমুন্ড ও এসি মিলানের ম্যাচে শুরু থেকে দেখা গেছে নাটক। দারুণভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে এদিন ম্যাচের ৬ মিনিটেই পেনাল্টি আদায় করে নেয় মিলান। কিন্তু অলিভিয়ের জিরুর পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। একটু পর উল্টো পেনাল্টি পায় ডর্টমুন্ড। তবে মিলানের মতো ভুল করেনি তারা। স্পট কিকে গোল করেন মার্কো রিওস।

গোল খেয়েও অবশ্য দমে যায়নি মিলান। লড়াই চালিয়ে গিয়ে ম্যাচের ৩৭ মিনিটে ঠিকই সমতা ফেরায় তারা। প্রায় একক প্রচেষ্টায় গোল করেন স্যামুয়েল চুকউইজে। সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় দুইদল। কিন্তু বিরতির পর ডর্টমুন্ডের দাপটের সামনে টিকতে পারেনি মিলান। শেষ পর্যন্ত হেরেছে ৩-১ গোলের ব্যবধানে। বরুসিয়ার হয়ে পরের গোল দুটি জেমি বাইনো-গিটেনস ও করিম আদিয়েমির।

এদিকে, রাতের অন্য ম্যাচে ইতিহাদে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ঘাম ঝরিয়ে ছেড়েছে আরবি লাইপজিগ। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচের ৩৩ মিনিটের মধ্যে লোইস ওপেন্ডার জোড়া গোলে লিড নেয় জার্মান ক্লাবটি। দুই গোলে পিছিয়ে পড়া সিটি চেষ্টা করেও প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় পেপ গার্দিওলার দল। দুই গোল শোধ করার সঙ্গে জয়সূচক তৃতীয় গোলটিও আদায় করে নেয় তারা।

এদিন ৫৪ মিনিটে সিটির হয়ে প্রথম গোলটি করেন আর্লিং হলান্ড। এই গোলে নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন হলান্ড। সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ৪০ গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন হলান্ড। ৩৫ ম্যাচে এই গোলগুলো করেছেন নরওয়েজীয় তারকা। এরপর ৭০ মিনিটে ফিল ফোডেন সমতা ফেরান সিটির হয়ে। আর সিটির হয়ে ৮৭ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন আর্জেন্টাইন তারকা হুলিয়ান আলভারেজ।

news24bd.tv/SHS