গাজায় দাদা নাতনির যে দৃশ্য কাঁদালো সবাইকে

সংগৃহীত ছবি

গাজায় দাদা নাতনির যে দৃশ্য কাঁদালো সবাইকে

অনলাইন ডেস্ক

ছোট্ট এক শিশুর নিথর দেহে অনবরত চুমু দিচ্ছেন এক বৃদ্ধ। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত সপ্তাহে এমন এক চিত্র দেখা যায়। প্রাণহীন ছোট্ট ওই শিশুর কপালে-চোখে বৃদ্ধের চুমু দেওয়ার ঘটনা দেখে আশপাশের সবাই কেঁদেছিলেন। সেই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যে শিশুটিকে পরম মমতায় বৃদ্ধ আদর করছিলেন তার নাম রিম। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। আর ওই বৃদ্ধটি হলেন তার দাদা নাভান।  

বৃদ্ধ নাভানই সিএনএনের সাংবাদিকদের গাজায় তার বিধ্বস্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন।

ওই বাড়িতে বিমান হামলায় ছোট্ট রিম ও তার বড় ভাই পাঁচ বছর বয়সী তারেক প্রাণ হারায়।

তিনি জানিয়েছেন, রিম তার কতটা আদরের ছিল। এছাড়া কেন রিমের নিথর দেহে অনবরত চুমু দিয়েছিলেন সে কথাও প্রকাশ করেছেন এই দাদা।  

তিনি বলেছেন, ‘আমার নাতি-নাতনিরা খুবই ছোট ছিল। যুদ্ধ কি সেটি বোঝার ক্ষমতা তাদের ছিল না। আমি কোনো যোদ্ধাও না। যুদ্ধের সাথে আমার পরিবারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ’

ছোট্ট রিম ও তার দাদা:  ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক হত্যার আগের ও পরের ছবি

তিনি আরও বলেছেন, ‘(মৃত্যুর পর) তাকে কোলে নিয়ে আমি বলছিলাম; আমাকে চুমু দাও যেমনটা করে আগে দিতে। কিন্তু সে আর আমাকে চুমু দেয়নি। আমি তার গালে সবসময় চুমু দিতাম। তার নাকে চুমু দিতাম। এতে সে খিলখিল করে হাসত। ’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৃদ্ধ নাভানের দুটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। একটিতে রিমকে আদর করতে দেখা যায় তাকে। অপরটিকে দেখা যায় ৫ বছর বয়সী তারেকের চুল ঠিক করে দিচ্ছেন তিনি। তাদের দুজনকেই ওই সময় দাফনের জন্য কাফনের কাপড়ে মোড়ানো হয়েছিল।

তারেকের প্রাণহীন দেহের চুল ঠিক করে দেওয়া নিয়ে নাভান বলেছেন, ‘আমি তার চুল ওইভাবে ঠিক করে দিয়েছি; যেভাবে সে সবসময় বলত। একটি ছবি দেখিয়ে সে আমাকে বলত চুল এভাবে ঠিক করে দিতে। সে এভাবে চুল রাখতে পছন্দ করত। ’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি মনে মনে ভাবছিলাম, আশা করছিলাম তারা শুধুমাত্র ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু তারা ঘুমিয়ে ছিল না। তারা চিরতরে চলে গেছে। ’

নাভান জানিয়েছেন, যুদ্ধের মধ্যে তার নাতি-নাতনিরা ফল খাওয়ার আবদার করেছিল। কিন্তু তিনি তাদের সেগুলো এনে দিতে পারেননি। এছাড়া তারা বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছিল। অব্যাহত বিমান হামলার কারণে সেটিও করতে পারেননি। এ কথা বলে অঝোরে কাঁদতে থাকেন বৃদ্ধ নাভান।

ওইদিনের ওই হামলার সময় রিম ও তারেক তাদের মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল। সঙ্গে তাদের আরেক ভাই ছিল। রিমের মা ও ভাই বাঁচলেও ইসরায়েলিদের হামলায় মাত্র তিন বছর বয়সেই না ফেরার দেশে চলে গেছে সে।  
news24bd.tv/aa