বেশ কয়েক বছর আগে ‘ইউরোপকেন্দ্রিকতা’ নিয়ে আমার একটা আলোচনার শেষে একইসঙ্গে পিএইচডি’র একজন বাংলাদেশি ছাত্র, একজন ভারতীয় ‘বহুত্ববাদী’ অধ্যাপক আর দারুণভাবে ভ্রু-স্বর্গমুখী করা এক ইংরেজ গবেষক ধারণা করে বসেছিলেন যে, আমি পশ্চিম-বিদ্বেষী! তখন স্পষ্ট করেই বলতে হয়েছে এবং আবারও বলি যে, ইউরোপকেন্দ্রিকতার সমালোচনা বা বিরোধিতা আর পশ্চিম-বিদ্বেষ এক জিনিস নয়। ইউরোপকেন্দ্রিকতার বিরোধিতা মানেই ইউরোপবিরোধিতা নয়। এও স্পষ্ট করে বলা দরকার, জ্ঞান-বিজ্ঞানের জগতে, চিন্তার জগতে, সাহিত্য-সঙ্গীত-শিল্পকলার জগতে ইউরোপের বিস্তর ও বিস্ময়কর অবদানকে অস্বীকার বা বর্জন করার অর্থ হচ্ছে মানুষের ঐতিহাসিক ও সৃজনশীল অভিযাত্রা আর অর্জনকেই অস্বীকার বা বর্জন করা। ‘আমি-কি-হনুরে!’-মার্কা গৌরববোধ আর আত্মকেলি থেকে ‘অপর’কে অস্বীকার আর অবহেলা করার জাতীয়তাবাদী অনুশীলনও ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু কথা থেকে যায়। তাহলে কয়েকটা বিষয়কে সংক্ষেপে ও ‘ক্যাটাগরিকালি’ সামনে আনা যাক। প্রথমত বিস্ময়কর অবদানের নামে যখন এই ইউরোপ তার শ্রেষ্ঠত্বকে প্রশ্নহীনভাবে উদযাপন করতে থাকে, তখনই প্রশ্ন থাকে, থাকে প্রতিরোধও।দ্বিতীয়ত, এই ইউরোপের অবদানের পেছনে ‘পূব’-এর অবদানের যে লম্বা ইতিহাস আছে, তাকে যখন অস্বীকার করা হয় বা এমনকি সেই ইতিহাসকে যখন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয় বা নিদেনপক্ষে এই ইতিহাস নিয়ে যখন কেবল লাগাতার নৈঃশব্দ বিরাজ করে, তখনই প্রশ্ন থাকে, আপত্তি থাকে, থাকে প্রতিরোধও।
news24bd.tv/ডিডি