আওয়ামী লীগ এখন ‘লোক ভাগানো’র দলে পরিণত হয়েছে: রিজভী

সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগ এখন ‘লোক ভাগানো’র দলে পরিণত হয়েছে: রিজভী

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অর্থ দিয়ে, প্রতারণা করে, প্রলোভন দেখিয়ে নাম শোনা যায়নি, এমন মানুষদের আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ভিড়িয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন ‘লোক ভাগানো’র দলে পরিণত হয়েছে। আজ বুধবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আহ্বান জানান  বিএনপির এই নেত।

রিজভী বলেন, গোটা দেশের জনগণ, সব বিরোধী দলগুলোর বিরোধিতা এবং আন্তর্জাতিক মহলের আহ্বান উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করার অপরিণামদর্শী আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠেছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার একগুঁয়েমি দেখে অনুমিত হচ্ছে তিনি দেশ ও জনগণকে ধ্বংস করেই তবে বিদায় নেবেন। যখন দেশের ঘরে ঘরে ক্ষুধার জ্বালায় মরণাপন্ন মানুষ, অন্নের অভাবে কচু-ঘেচু সেদ্ধ খেয়ে প্রাণ বাঁচাচ্ছে, চারদিকে হাহাকার, অর্থনীতি বলে কিছু নেই এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী মতের গলা টিপে ঢাক-ঢোল-তবলা নিয়ে আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির উৎকট উল্লাস চলছে দিকেদিকে। চলছে বিরোধীদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করার মহোৎসব।

'জনগণ জানতে চায়, গণভবনের তালিকায় শুধু নির্বাচনের নামে সিলমোহর দেওয়ার জন্য কেন রাষ্ট্রীয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে? দেউলিয়া ও বুভুক্ষু পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে কেন এই ভোটের নামে করা হচ্ছে ভেল্কিবাজি,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, কাকে এমপি ঘোষণা করা হবে, আর কাকে তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হবে সব কিছুই তো প্রস্তুত আছে। এখনি ঘোষণা দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। যারাই জিতবে তারা সবাই তো প্রধানমন্ত্রীর লোক 'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন'!

রিজভী বলেন, যারা এই পাতানো সিলমোহরের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা করছেন, তাদের আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনাদের যদি ন্যূনতম দেশপ্রেম থাকে, বিবেচনাবোধ থাকে তবে ফিরে আসুন। আপনারা মীর জাফরের উত্তরসূরি হবেন না।

আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাগ-বাটোয়ারার পাতানো নির্বাচনে কোনো সহযোগিতা করবেন না। ভোটাররা ভোটদান থেকে বিরত থাকুন। যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যাহার করুন। না হলে এই অমার্জনীয় অপকর্মের জন্য জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাসের পাতায় আপনাদের নাম বেইমান-মীরজাফরের পাশে লেখা থাকবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এমপি হওয়ার জন্য জনগণের কাছে নয়, আওয়ামী লুটেরা চক্র ও তাদের দোসররা এখন এমপি হওয়ার জন্য মাফিয়াদের গণভবনের দিকে ছুটছে। ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই হাস্যকরভাবে আকুতি জানাচ্ছেন সংসদে যাওয়ার জন্য। তারা কেউ সরকার গঠনের কথা ভাবছেন না, তারা শুধু সংসদে যেতে চান। তাই তারা শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিবের 'সরকার আশ্বাস দিয়েছে বলেই নির্বাচনে এসেছি' এমন বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা জাপা মহাসচিবের বক্তব্যে স্পষ্ট। শেখ হাসিনার আশীর্বাদ ছাড়া দেশে কেউ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও নেই।

'গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, '১২ কোটি ভোটারের কাছে আমাদের আহ্বান আপনারা কারও প্রহসনের নির্বাচন করার স্বার্থ সিদ্ধিতে অংশ নেবেন না। শেখ হাসিনার ক্ষমতার লিপ্সা মেটাতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দেশের জন্য কলঙ্ক বয়ে এনেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী কর্মকর্তা যারা শেখ হাসিনার ক্ষমতালিপ্সা মেটাতে এভাবে দেশের সম্মান নষ্ট করছেন, তাদের অচিরেই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। '

news24bd.tv/aa