দোয়া কবুলের মূল্যবান সময়

সংগৃহীত ছবি

দোয়া কবুলের মূল্যবান সময়

অনলাইন ডেস্ক

বিপদ-আপদ, ক্ষমা ও কিছু চাওয়া এবং ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মুমিনরা দুই হাত তুলে ধরেন পালনকর্তার দরবারে। আল্লাহ দয়াময় ও পরম করুণাময়। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে তখন তিনি তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না।

যেকোনো সময় আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন।

তবে হাদিসে কিছু বিশেষ সময়ের কথা উল্লেখ রয়েছে, যখন দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

সিজদার সময় দোয়া : সিজদা বান্দাকে আল্লার একবারে কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদারত বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী। সুতরাং সে সময় বেশি বেশি দোয়া করো।

’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮২)

আজানের সময় দোয়া : আজানের সময় দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন মুয়াজ্জিন আজান দেয় আসমানের দোয়ার খুলে যায় ও দোয়া কবুল হয়’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৮৮৪)

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া : হাদিসে এসেছে, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল হয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১২)

শেষ রাতে দোয়া করলে কবুল হয় : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ প্রতি রাতের শেষ প্রহরে (যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে) দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তিনি তখন বলেন, ‘আছ কি কোনো আহ্বানকারী? আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কোনো প্রার্থনাকারী কি আছো, আমি তোমাকে যা চাও তা দেব? কেউ কি ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি  তোমাকে ক্ষমা করে দেব। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৫৮)

ফরজ নামাজের পর দোয়া : আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি উত্তর দিলেন, ‘রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৯৮)

জুমার দিন দোয়া কবুল হয় : শুক্রবার সপ্তাহের সেরা দিন। অন্য দিনের চেয়ে মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ। এ দিনে মানুষের দোয়া কবুল হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবুল কাসিম (সা.) বলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যদি সে মুহূর্তটিতে কোনো মুসলিম দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণের জন্য দোয়া করলে তা আল্লাহ তাকে দান করবেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪০০; মুসলিম, হাদিস : ১৪০৭)

বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয় : বৃষ্টির সময় মহানবী (সা.) বেশি বেশি দোয়া করতেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টি বর্ষণের সময়ের দোয়া। ’ (সুনানে আবু দাউদ, সহিহুল জামি, হাদিস : ৩০৭৮)

রমজান ও শবে কদরের রাত : পবিত্র রমজান মাস অতি বরকতময়। রমজানে ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। এ ছাড়াও আছে হাজার রাতের চেয়ে উত্তম মহিমান্বিত কদর। বরকতময় এ রাতে ফেরেশতারা বান্দার দোয়া আল্লাহর দরবারে নিয়ে যান।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের (জীবনের) সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। ’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৭২)

হজের মৌসুমে দোয়া করলে কবুল হয় : প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘জিলহজের এ দশকে সম্পাদিত আমল থেকে আল্লাহর কাছে উত্তম কোনো আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করেন, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি নয়? তিনি বলেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে বের হয় অতঃপর জিহাদের ময়দান থেকে কিছুই নিয়ে না ফিরে। ’ (অর্থাৎ শহীদ হয়ে যায়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যতিক্রম) (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস : ২০৯০)

news24bd.tv/aa