জেনে নিন, শীতে শিশুকে কীভাবে গোসল করানো উচিত

প্রতীকী ছবি

জেনে নিন, শীতে শিশুকে কীভাবে গোসল করানো উচিত

এলো এলো করে অবশেষে শীত এলো। এই সময় আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় অন্যসব ঋতুর থেকে কিছুটা বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। শরীরে যেমন লোশন, গ্লিসারিন, ময়েশ্চারাইজার বা তেল ব্যবহার করা হয়, তেমনি প্রয়োজন হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার। স্বাভাবিকভাবে বাড়ির বড়রা নিজেই নিজের যত্ন নিয়ে থাকেন।

কিন্তু ছোটদের প্রতি খেয়াল রাখতে হয় বড়দের।

শীতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যকরী উপায় হচ্ছে গোসল করা। শীতকালে শিশুদের গোসল করালে ঠান্ডা-কাশি, নিউমোনিয়ার সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পরিষ্কারও থাকবে।

তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। নবজাতক ও শিশুদের গোসল করানো নিয়ে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. ফারাহ দোলা।

এ চিকিৎসকের ভাষ্যমতে, চার সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ দিনের কম বয়সী শিশুদের নবজাতক বলা হয়। শিশু জন্মের ৭২ ঘণ্টা পর প্রথম গোসল করানো হয় নবজাতককে। হতে পারে তা শীত বা গ্রীষ্মকাল। এ সময় সপ্তাহে দুই বা তিনদিন গোসল করানো উচিত। তবে এরপর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন গোসল করাতে পারেন।

শিশুকে সবসময় গরম রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আর শীতে সেটা আরও বেশি জরুরি। কেননা, শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় ত্বক শুষ্ক থাকে। এ থেকে বিভিন্ন সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যেসব শিশুদের বয়স এক বছরের বেশি, তাদের যদি সর্দি-কাশি বা নিউমোনিয়ার লক্ষণ না থাকে তাহলে প্রতিদিন গোসল করাতে পারেন।

তবে অঞ্চলভেদে কখনো কখনো শীতের মাত্রার ব্যবধান হয়ে থাকে। এ জন্য অতিরিক্ত শীত অনুভব করলে এক বা দুইদিন পর পর গোসল করাতে পারেন। আর গোসল যদি প্রতিদিন সম্ভব না হয় তাহলে কুসুম গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে শিশুর শরীর ভালো করে মুছে দিতে পারেন।

শীতে শিশুকে গোসল করানোর সময় যেসব ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত, সেসব তাহলে জেনে নেয়া যাক এবার―

> প্রতিদিন একই সময়ে শিশুকে গোসল করানো উচিত। এতে আপনার শিশুর মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা গড়ে উঠবে। তবে খাওয়া বা ঘুমানোর সময় শিশুকে কখনোই গোসল করানো ঠিক নয়। এতে মেজাজ খিটখিটে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শিশুকে কোথায় গোসল করাচ্ছেন, সেটিও জরুরি। কারণ, গোসলের জায়গা অবশ্যই উষ্ণ হতে হবে। যেন ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করতে না পারে।

> শিশুকে গোসলের আগে শরীরে প্রাকৃতিক কোনো তেল মালিশ করতে পারেন। তবে শিশুর ত্বকে যদি কোনো ধরনের সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তেল ব্যবহার করবেন না।

> শিশুকে গোসলের পানি খুব গরম বা ঠান্ডা হওয়া যাবে না। কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করানো উচিত। শিশুর গায়ে পানি দেয়ার আগে অবশ্যই হাত দিয়ে দেখে নেবেন, পানি খুব বেশি গরম কিনা। আবার দীর্ঘ সময় নিয়েও গোসল করানো ঠিক নয়। ৫ থেকে ১০ মিনিট সময়ই যথেষ্ট। আর গোসলের পর যেসব পোশাক পরাবেন, সেসব হাতের খুব কাছেই রাখবেন। যেন শরীর মুছিয়ে দেয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পরিয়ে দেয়া যায় শিশুকে।

> শিশুকে গোসলের সময় কানের ভেতরে যেন পানি প্রবেশ না করে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। গোসল করানোর পর ভালো করে কান ও মাথা মুছে দিতে হবে। চুলে যেন পানি না থাকে। চুল যদি লম্বা হয় তাহলে ভালো করে মুছে দিতে হবে। কারণ, সারা শরীর শুকনা হলেও চুল যদি ভেজা থাকে তাহলে শিশুর ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থেকে যাবে। আর গোসলের পর ত্বক উপযোগী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। তবে হ্যাঁ, শিশুকে কোনো অবস্থাতেই একা একা পানির কাছে যেতে দেবেন না। এ জন্য তাকে সবসময় চোখে চোখে রাখুন।

news24bd.tv/aa